গাজীপুর: যানজট জলাবদ্ধতা দূর করতে হলে প্রেম ভেঙ্গে যাবে, ভালোবাসা পালাবে, চাঁদাবাজি বন্ধ করেতে হবে। জবর দখল প্রতিরোধ করতে হবে। রাস্তার উপরে গড়ে উঠা স্থাপনা ভেঙ্গে চুরমার করতে হবে। পুকুর জলাশয় নালা ডুবা উদ্ধার করতে হবে। যে কোন মূল্যে প্রাকৃতিক পানির স্তর সংরক্ষণ করতে হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়ক,সড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও ছোট খাটো সড়ক নির্মাণের সময় কিছু কিছু জায়গায় অনাকাঙ্খিতভাবে আাঁকা বাঁকা, রাস্তার উপরে দখল হওয়া স্থায়ী দালান বাসাবাড়ী, দোকানপাট, মার্কেট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রাস্তার উপরেই নির্মিতি। গাজীপুর মহানগরে এমন অনেক সড়ক আছে, ৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তা দিয়ে রিকশা পরর্য ন্ত প্রবেশ করতে কষ্ট হয়। নাগরিকেরা রাস্তার উপরে সীমানা প্রাচীর কিংবা বহুতল ভবনের দেয়াল রাস্তার উপরে নির্মিত। অনেক পাড়া মহল্লার রাস্তায় প্রভাবশালীদের বাসাবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রাস্তার পাশে সরকারি জলাশয় পুকুর ভরাট করে নির্মিত স্থাপনা ও রাস্তার প্রয়োজনে ভাঙ্গা হয়নি। সদ্য নির্মিত বড় ও মসৃণ রাস্তার মাঝে বিদ্যুতের খুঁটিও দেখা যায়। রাস্তা জবর দখলকারী ঐ সকল প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জবর দখল সংরক্ষণে খোলস পাল্টায়। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তারা ক্ষমতার মধ্যেই অবস্থান করে যার ফলে মহানগরের দখল হওয়া রাস্তার জায়গা আর উদ্ধার হয়না।
এদিকে গাজীপুর মহানগরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি জায়গায় একাধিক বহুতল স্থাপনা জবর দখলকারীরা সরকারি জায়গা দখলকরে বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমতি সংগত কারনে পায়না। তাই প্লান পরিকল্পনা ছাড়াই সরকারি জায়গায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন স্থাপনা ও বহুতল ভবন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি স্থাপনায় গড়ে উঠা মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করে একটি বিশেষ শ্রেনির লোক। সব সময় সরকারি দলের হয়ে থাকা ঐ চক্রটি যুগের পর যুগ রাস্তাঘাট জবর দখল করে চাঁদাবাজি করছে। এধরনের চক্রের সাথে শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় পুলিশ এমনকি কিছু কথিত রাজনৈতিক সাংবাদিক জড়িত। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, কিছু কিছু মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রভাবশালীদের ছবি তুলে ও লাইভ করে আনুকূল্য অর্জন করে । ক্ষমতার কাছাকাছি অবস্থান করায় সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্র এ সকল তোষামুদি ও চাটুকারি ব্যক্তিদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে থাকে।ফলে অতি সহজেই সরকারি রাস্তা ও জায়গা দখলকারীরা নির্ভিগ্নে ও নিরাপদে যানজট তৈরির কারন প্রতিষ্ঠা করে রাখে।
সরেজমিন জানা যায়, জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের জায়গায় গড়ে উঠা ভাসমান রেলওয়ে মার্কেট। দীর্ঘদিন যাবৎ এই মার্কেটে চাঁদা তুলে কামাল হুসেন ও জামাই বাবুল নামের দুই ব্যক্তি। গত প্রায় বিশ বছর যাবৎ এরা অবৈধ দোকান পাটের চাঁদা উত্তোলণ করছে। মাঝে মাঝে এদের কিছু সময় কারাগারে থাকতে হয়। গত বিশ বছরে অসংখ্য ক্ষমতাশীল নেতা, কর্তব্যরত পুলিশ এমনটি কিছু সংখ্যক হলুদ সাংবাদিক কমদামে কিংবা বিনা দামে এই অবৈধ মার্কেট থেকে ফলমূল নেয়। একই প্রক্রিয়ায় চান্দনা চৌরাস্তা, কোনাবাড়ী,কাশিমপুর, বাসন,টঙ্গী, এরশাদ নগর, স্টেশন রোড, টঙ্গী বাজার, মিরের বাজার, ভোগড়া বাইপাস, হারিকেন, বোর্ড বাজার এলাকায় এই চাঁদাবাজি ব্যবসা জমজমাট। সরকারি রাস্তায় অবৈধ চাঁদাবাজি ব্যবসা চিরায়ত সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।ক্ষমতার পট পরিবর্তনের মাধ্যমে গটফাদারদের কিছু পরিবর্তন হলেও চাঁদা উত্তোলণকারীদের পরিবর্তণ ঘটেনা। রাস্তার চাঁদা না পেলে স্থানীয় নেতার কাতারে নামই উঠেনা । প্রতিদিন রাস্তা নিয়ন্ত্রক, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অফিস ক্যম্প ও বক্সে কিছু সংখ্যক হলুদ সাংবাদিক সারাদিন বসে থাকে।চাঁদার ভাগ পাওয়া পর্য ন্ত এদের বসে থাকতে দেখা যায়। চান্দনা চৌরাস্তায় ফুটপাতের হকারদের নিকট থেকে চাঁদা তুলে প্রতিদিন এক প্যকেট বেনসন সিগেরেট নেয় এমন সিনিয়র সাংবাদিক গ্রাম বাংলা নিউজের কাছে হাতেনাতে ধরা পরেছে। এদিকে একটি সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ হলুদ সাংবাদিক চক্র রাস্তার পাশে কুরবানীর হাটকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজিতে নেমে পরেছে। প্রতি বছরের ন্যায়, সড়ক মহাসড়কের উপর গড়ে উঠা কুরবানির পশুর হাট থেকে দেদারছে চাঁদাবাজি করছে। এদের জন্য কুরবানির মাঠে শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয় সবসময় । পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এই ধরনের চাঁদাবাজরা চাঁদা চাইলে ৯৯৯ কল করা উচিৎ। এমতবস্থায় যানজট ও জলাবদ্ধতা দূরিকরণে সমন্বিতভাবে কঠিন পদক্ষেপ না নিলে যানজট ও জলাবদ্ধতা কোনদিনই দূর হবেনা।
(চলবে….)