চলমান লকডাউনন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্তের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। একই সঙ্গে কমিটি চলমান লকডাউন আরও ১৪ দিন বৃদ্ধির সুপারিশ করেছেন। ১২ ই জুলাই ৪১তম অনলাইন সভায় তারা এই সুপারিশ করেন।
কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সুপারিশসমূহ গৃহীত হয়। আজ রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো সুপারিশে বলা হয়,
১. সারাদেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এমতাবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সরকারী সিদ্ধান্তে
কমিটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি চলমান কঠোর লকডাউন আরো ১৪ দিন বাড়ানোর সুপারিশ
করেন।
২. লকডাউনের অংশ হিসেবে কমিটি কোরবানির হাট বন্ধ রাখার প্রস্তাব করেন, প্রয়োজনে ডিজিটাল হাট পরিচালনার ব্যবস্থাও করা
যেতে পারে।
তবে সরকার লকডাউন শিথিল করে সীমিত পরিসরে কোরবানির হাট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলে, সেক্ষেত্রে সংযুক্ত বিধি নিষেধ সমূহ প্রয়োগের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।
৩. সরকার সারাদেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি করছে, যা সন্তোষজনক। জাতীয় পরামর্শক কমিটির পূর্ববর্তী সভার
সুপারিশের প্রেক্ষিতে বেসরকারী পর্যায়ে পরীক্ষার মূল্য পূণনির্ধারণ করায় সভায় সরকারকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
দৈনিক টেস্টের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি জন্য বেসরকারী পর্যায়েও টেস্ট বৃদ্ধি প্রয়োজন, এ লক্ষ্যে টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় কিটের দাম
আরো হ্রাস পাওয়ায় বেসরকারী পর্যায়ে পরীক্ষার মূল্য কমিয়ে ১০০০-১৫০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়।
৪. বর্তমানে অনেক কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি আছে। যার ফলশ্রুতিতে চিকিৎসা নিশ্চিতকরণের
লক্ষ্যে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন অতীব জরুরি। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পর্যায়ে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ
গ্রহণ করেছে। উক্ত উদ্যোগকে সভায় অভিনন্দন জানানো হয় এবং দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ করা হয়।
৫. সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আমদের দেশে কোভিড-১৯ এর টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে এবং আবারো সারাদেশে একযোগে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। এই টিকার আওতায় দ্রুত আরও বেশি মানুষকে আনার উদ্দেশ্যে টিকার বয়সসীমা ১৮ তে নামিয়ে আনা,
এনআইডিবিহীন জনসাধারণকে টিকার আওতায় আনা, রেজিস্ট্রেশন সহজীকরন ইত্যাদি বিষয়ে সরকারকে অতি সত্ত্বর সিদ্ধান্ত
গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
৬. কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গৃহীত সরকারের পদক্ষেপ সমূহকে সাফল্য মন্ডিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের
সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়।