গাজীপুর: ক্যাডার গ্যাং,কিশোর গ্যাং ও সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের হাতে পরিবহন সেক্টর জিম্মি থাকায় অচল যানবাহন ও যত্রতত্র স্ট্যান্ড গড়ে উঠায় কৃত্তিম যানজটের সৃষ্টি হয় রাজপথে।
গাজীপুর মহানগরের মহাসড়ক,আঞ্চলিক সড়ক, ছোট বড় সড়ক সহ প্রায় সকল সড়কে এই দুটি সমস্যা যানজটের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজনৈতিক পট, জন প্রতিনিধি পরিবর্তন এমনকি বড় আমলা পর্যায়ের পরিবর্তন হলেই অকেজো যানবাহন ও যত্রতত্র স্ট্যান্ড গড়ে উঠার হিরিক পরে যায়। বিনা পরিশ্রমে কাঁচা টাকা অপারাধকে প্ররোচনা দেয়। প্রায় টেম্পু স্ট্যান্ড দখল জবর দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়ে থাকে। টেম্পু স্ট্যান্ড দখল নিয়ে গোলগুলির শব্দও পাওয়া যায়।
গাজীপুর শহরের মিডিয়া পাড়া হিসাবে খ্যাত হাবিবুল্লাহ স্মরণীতে টেম্পু স্ট্যান্ড নিয়েও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
ইতিহাস বলছে, টেম্পু স্ট্যান্ড ব্যবসায়ীরা মাঝে মাঝে ক্ষমতার তারতম্যের ভিত্তিতে নেতা পরিবর্তন করে হলেও টেম্পু স্ট্যান্ডবাজী ঠিক রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুরে একজন প্রভাবশালী নেতার সাথে প্রায় একডজন টেম্পু স্ট্যান্ড গটফাদার আভ্যন্তরীণ বিমানে সফর করেছেন মর্মে সামাজিক মাধ্যমে ছবি ভাইরাল হয়েছে। ফলে টেম্পু স্ট্যান্ড নিয়ে পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজী বন্ধের উদ্যোগ সচারাচর চোখে পরেনা ।
লক্ষ্য করলে দেখা যায়, গাজীপুর রাজবাড়ীর প্রায় চারপাশেই বিচ্ছিন্নভাবে টেম্পু স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। একই সাথে অনিয়ন্ত্রিত তাকওয়া পরিবহন টেম্পু স্ট্যান্ডগুলোকে বাসস্ট্যান্ড করায় গাজীপুর শহরের প্রধান সড়কগুলো অনেকটা স্ট্যান্ডের শহরে পরিণত হয়েছে। গাজীপুর মহানগরে চক্রাকারে তাকওয়া পরিবহন অপরিকল্পিতভাবে চলাচল করায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্ট্যান্ডের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এমনও দেখা যায় ১ কিলোমিটার রাস্তায় ৩/৪টি স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। রাজপথে ঘন ঘন স্ট্যান্ড হওয়ায় যানজট লেগেই আছে। এসব ছাড়াও ভিআইপি পরিবহনের মত কিছু পরিবহন দীর্ঘ দিন ধরে বিনা অনুমতিতে স্ট্যান্ড তৈরী করে মূল শহর থেকে পরিচালিত হওয়ায় সমস্যা আরো বাড়ছে।
গণপরিবহনের যাতায়াতে বিচ্ছিন্ন স্ট্যান্ডগুলোতে রাজনৈতিক ক্যাডার, পুলিশ, এমনকি কিছু হলুদ সাংবাদিক নিয়ন্ত্রক চক্রে অবস্থান করায় অনিয়মটি স্পষ্ট হয়ে উঠেনা।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক,ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক, ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়ক ভোগড়া বাইপাস সড়কের গড়ে উঠেছে যত্রতত্র টেম্পু স্ট্যান্ড। এসকল স্ট্যান্ড থেকে চলাচলের অনুপযোগী যানবাহন নিয়মিত চলাচল করে। হিউম্যান হলার,টেম্পু,লেগুনা,বটবডি সহ অসংখ্যা যানবাহন কাগজপত্র বিহীন চলাচল করে । এগুলো পরিচালনা করে কম বয়সী শিশু কিশোর যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্সও নাই।
এছাড়া ফুটপাতে রকমারী দোকান কাঁচা টাকার উৎস। প্রতিদিন ফুটপাতের বাজার থেকে চাঁদাবাজি হয় লক্ষ লক্ষ টাকা।
এমতবস্থায় গাজীপুর মহানগরে যত্রতত্র স্ট্যান্ড,রাজপথে অকেজো যানবাহন, অবৈধ চালক ও ফুটপপাতের বাজার যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারন।
সাধারণ মানুষেরা মনে করেন, এসকল সমস্যা সমাধান করতে পারলে যানজট নিরসন সম্ভব। অন্যথায় ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় বড় বড় রাস্তা তৈরি করে যানজট নিরসন সম্ভব নয়।
(চলবে…)