মোস্তফা কামাল/ ফাহিমা নূর/ ইসমাইল হোসেন, গাজীপুরঃ কঠিন বিধিনিষেধ সত্যেও চোর- পুলিশ খেলারমত রাস্তায় নামে নিম্নআয়ের মানুষ। পেটের টানে তারা রাস্তায় আসেন, এই দাবী তাদের।
আজ শনিবার কড়াকড়ি লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে সকাল বেলায় গাজীপুরে এই দৃশ্য দেখা যায়।
সরেজমিন জানা যায়, প্রশাসনের কড়াকড়ি ভূমিকার মধ্যেও গাজীপুরের সর্বাত্মক লকডাউনে সকালে বিপুল সংখ্যক অটোরিকশা, ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। এসব যানবাহন মূলত ব্যবহার করছেন পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা। কিছু কিছু পোশাক কারখানা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকদের আনা-নেওয়া করতে পারলেও অধিকাংশ কারখানায় সে ব্যবস্থা করেনি। তাই দূর থেকে কারখানায় আসা যাওয়া করতে গিয়ে শ্রমিকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
লকডাউনের মধ্যে জেলা শহরের জয়দেবপুর রেল গেট, চান্দনা চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে শত শত দিনমজুরকে সকালে কাজের সন্ধানে জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে- বসে থাকতে দেখা গেছে। তাদের অধিকাংশই মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এইসব দিনমজুররা বলছেন, তাদের কাছে লকডাউন কিংবা করোনার ভয়ের চেয়ে খাবারের যন্ত্রণা অনেক বেশি, এজন্যই কাজের সন্ধানে বাইরে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। অবশ্য, লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছেন।
শুক্রবার লকডাউন বাস্তবায়ন ও করোনা সংক্রমণের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করার লক্ষ্যে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বাধীন ২২ টি মোবাইল টিম ১৩০ টি মামলা দায়ের করে ৮৫ হাজার ৯৮০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজা জেসমিন জানান, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে দোকানপাট খোলা রাখা হলে কিংবা নিয়ম ভেঙে যানবাহন চলাচল করা হলে জরিমানা করা হচ্ছে, মামলা দেয়া হচ্ছে এবং আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ও বাধ্য করা হচ্ছে। লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আর শুক্রবার গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিসের দেয়া তথ্যমতে জেলায় ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৮৩জন। এ নিয়ে এই জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২,৭৬৯ জন। আর ২৪ ঘন্টায় নতুন করে জেলায় মারা গেছে দুইজন। এ নিয়েই জেলায় করোনা ভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ২৪৪ জন।