ইসমাইল হোসেনঃ করোনার দ্রুত সংক্রমন প্রতিরোধে চলছে লকডাউন। সরকারি গেজেটে বিধি-নিষেধ, কঠোর বিধি-নিষেধ জারি হচ্ছে নানা সময়ে । দীর্ঘ সময় ধরে চলমান বিধি-নিষেধ কখনো হালকা লকডাউন, ভারি লকডাউন, সর্বাত্বক লকডাউন নামে চলছে।
গতকাল থেকে কড়াকড়ি লকডাউন শুরু। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে সেনাবাহিনী। সব বাহিনীর ভয়ে অকারনে বাইরে গিয়ে শত-শত মানুষ দন্ডিত হচ্ছেন, জরিমানা দিচ্ছেন। লকডাউনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন দেখে দৌড় দেওয়াদের দলে মিশে আছে ক্ষুধার্ধ মানুষ। সবকিছু বন্ধ থাকায় ভাসমান দিন মজুর, দোকানদার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, গণ পরিবহন কর্মী, বে-সরকারি স্কুল শিক্ষক, নির্মাণ শ্রমিক এমনকি ভিক্ষাবৃত্তি করে যারা প্রতিদিনের খাবার জোগাড় করেন তারাও আছেন।
শ্রমের বিনিময়ে দৈনিক খাবার সংগ্রহকারী এ সকল লোকদের জন্য সরকার ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন ৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতক দল, ব্যাক্তি সংগঠন, সংস্থা, বৃত্তবানদেরকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। কিন্তু এখনো কোন সাহায্য সহযোগিত বা অনুদান পৌছেনি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গতকাল থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হলেও দীর্ঘদিন ধরে মূলত বিধি-নিষেধ চলে আসছে। ফলে কাজ হারা মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কঠোর লকডাউনে এই সংখ্যা করোনা সংক্রমনের মতোই বেড়ে চলছে। করোনার সংক্রমন ও ক্ষুধার্থ লোকের সংখ্যা প্রতিরোধে এখনি সকল ধরণের সহায়তা পৌছে দেওয়া উচিত।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, টাকার অভাবে তৃণমূল মানুষ অসুস্থ্য রোগীকে কোলে করে হাসপাতালে নিচ্ছেন। দিন মজুরেরা কাজের আশায় বিচ্ছিন্নভাবে জমায়েত হয়ে পুলিশ দেখে দৌড়াদৌড়ি করছেন । করোনার সংক্রমন প্রতিরোধে চলমান লকডাউনে ঘরে থাকা ক্ষুধার্থ মানুষ খাদ্য না পেলে করোনার আক্রমণ ছাড়াই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরতে পারে।
পর্যবেক্ষণ বলছে, করোনায় নতুন গরিব হওয়া আড়াই কোটি মানুষের সংখ্যা দিগুণ হয়ে গেলে মোট জন সংখ্যার অর্ধেক মানুষ গরিবের তালিকায় উঠে যাবে। এতে সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে বাধার সৃষ্টি করবে।
ভুক্তভোগিরা বলছেন, সময় ক্ষেপন না করে এখনি আমাদেরকে খাবার দিন। না হয় করোনার হাত থেকে বাঁচলেও খাদ্যের অভাবে মরতে হবে।