ঢাকাঃ করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে রাজধানীসহ সারা দেশে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। আজ সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় এ লকডাউন। রিকশা ছাড়া সব ধরনের যন্ত্রচালিত গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। খোলেনি মার্কেট ও দোকানপাট। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ জেরা করছে। বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করছে তারা। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যদের। তবে সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত অফিস বন্ধ থাকায় সড়কে মানুষজনের চলাচল সীমিত রয়েছে।
পণ্যবাহী যানবাহন নির্বিঘেœ চলাচল করছে। জরুরি প্রয়োজনে যারা বের হয়েছেন তারা রিকশায় চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
সরজমিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রিকশা ছাড়া কিছুই চলছে না। ব্যক্তিগত দুয়েকটি প্রাইভেট কার চললেও চেকপোস্টে পড়তে হচ্ছে পুলিশের জেরার মুখে। এছাড়া মোটরসাইকেলে দুজন বহন করলে পুলিশ তাদের নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। গ্রহণযোগ্য উত্তর দিতে না পারলে গুনতে হচ্ছে জরিমানা।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডার ইউটার্নের আগে সড়কে বসানো হয়েছে পুলিশের একটি চেকপোস্ট। প্রায় সবগুলো প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আরেকটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে রামপুরা থেকে হাতিরঝিলের প্রবেশমুখে। সেখানেও ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলগুলোকে আটকে দেয়া হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বাইরে বের হওয়ার কারণ।
এদিকে গাবতলীর সড়কে তেমন কোনো যানবাহন দেখা যায়নি। যে দু’একটির দেখা মিলেছে সেগুলো পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কর্মীদের গাড়ি। এছাড়া কয়েকটি কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ চলাচল করতে দেখা গেছে। সেখানে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্টরা বলছেন, এই পথ ধরে পণ্যবাহী গাড়িগুলো ঢাকার বাইরে যাচ্ছে বেশি। এছাড়া সাভার-আশুলিয়াগামী পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কিছু গাড়ি ঢাকা থেকে বের হচ্ছে।
ওদিকে লকডাউন বাস্তবায়নে মোবাইল কোর্ট (ভ্রাম্যমাণ আদালত) পরিচালনার জন্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১০৬ জন কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বুধবার তাদের নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২১টি শর্ত দিয়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসররকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা। জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। এছাড়া প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হলেই গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।