কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): কঠোর লকডাউনের খবর পাওয়ার পর পরই রাতেরই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। রাজধানীর অন্যতম প্রবেশমুখ ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের বাবুবাজার বুড়িগঙ্গা সেতু ও পোস্তগোলা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে দেখা গেছে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের চাপ। যাত্রীরা জানান, আটকে পড়ারার আশঙ্কায় ঢাকা ছাড়ছেন তারা।
রাজধানীর বাবুবাজার ব্রিজ ও পোস্তগোলা ব্রিজের আশপাশ এলাকায় আজ শুক্রবার সকাল থেকেই যাত্রীদের চাপ অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি দেখা গেছে। বিকেলের দিকে এই চাপ অনেকটা বেড়ে যায়। এরপর রাতে যখন লকডাউনের দিনক্ষণ ঠিক হয় তখন যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ লক্ষ্য করা গেছে।
ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের বেশীর ভাগেরে মুখেই দেখা যায়নি মাস্ক, মানেননি কোনরকম স্বাস্থ্যবিধিও। তবে অভিযোগ করেছেন বাড়তি ভাড়া ও ভোগান্তি নিয়ে। এমন সময় কেন বাড়ি যাচ্ছেন, এমন প্রশ্নে তারা জানান- লকডাউনে ঢাকায় যেন আটকা না পড়েন তাই গ্রামে চলে যাচ্ছেন।
খোকন নামক এক যাত্রী জানান, ‘আমি দিনমজুরির কাজ করি, শার্টডাউন আসতেছে। এখন কাজ বন্ধ হবে এখানে থেকে কী করব? তাই চলে যাচ্ছি।’
খোকন জানান, যানবাহন না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে কাভার্ডভ্যান, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলসহ বিকল্প বাহনে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের। আরিফ নামক অপর এক যাত্রী বলেন, ‘বাড়িতে আগে থেকেই জরুরি কাজ ছিলো, সেজন্য বাধ্য হয়ে ট্রাকে করে বাড়ি যাচ্ছি। যদিও ভাড়া কয়েকগুন বেশি নিচ্ছে, সেই সাথে অনেক কষ্টও হচ্ছে।’
রাতে পুলিশের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে কেরানীগঞ্জের কদমতলী গোলচত্বর এলাকা থেকে ছেড়ে গেছে একাধিক পিকাপ ও ভাড়া চালিত মাইক্রবাস। অপরদিকে পোস্তগোলা সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত ইকুরিয়া এলাকা থেকে ছেড়ে যেতে দেখা যায় কয়েকটি পিকাপ। এসব পিকাপ ও মাইক্রবাসে গাদাগাদি করে ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী বহন করে চলতে দেখা গেছে।
রাতে পুলিশের তৎপরতা কম থাকায় এসকল যাত্রীবাহী মাইক্রবাস ও পিকাপ চলাচল করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় অনেকে বাড়ি ফেরার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। অটো, পিকঅ্যাপ বা ট্রাক যাই পাচ্ছেন তাতে করেই ঝুঁকি নিয়ে রওনা হচ্ছেন তারা।
এদিকে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগামী সোমবার থেকে পরবর্তী ৭ দিন পর্যন্ত সারা দেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার রাতে জরুরি তথ্য বিবরণীতে এ ঘোষণা দেয় তথ্য অধিদপ্তর।
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, কোভিড ১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে আগামী সোমবার থেকে পরবর্তী ৭ দিন পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। তবে গণমাধ্যম এর আওতামুক্ত থাকবে। বিস্তারিত আদেশ আগামীকাল শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই তথ্য বিবরণীতি।