তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সংসদে বিএনপিদলীয় নেতা অভিনেত্রী পরীমনির বিষয়টি নিয়ে বেশ কদিন ধরে বক্তব্য রেখেছেন। আমার কাছে মনে হলো তার কাছে খালেদা জিয়ার চেয়েও ওই চিত্রনায়িকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে।’ আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরে কে কোথায় গিয়ে মধ্যরাতে মদ্যপান করল, সেখানে ভাঙচুর হলো, আর তার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে কিছু ঘটনা ঘটল তাতে যেভাবে সবাই মত্ত হয়ে গেল; অথচ বিষয়টা জাতির জন্য মোটেও কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নয়। আমি এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে কেউ হেনস্থার শিকার হওয়াও ঠিক নয়, কেউ অহেতুক হয়রানি হওয়াও ঠিক নয়। ‘ সংসদে পরীমনিকে নিয়ে আলোচনার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকরা তুলে ধরলে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। সরকার দক্ষভাবে দেশ পরিচালনা করতে পেরেছে বিধায় এটি সম্ভবপর হয়েছে। করোনার মধ্যেও মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এমনকি মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে আমরা ভারতকেও ছাড়িয়েছি। করোনার মধ্যেও এই অর্থবছরের সমাপ্তিলগ্নে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে যাচ্ছে ৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। মূল্যস্ফীতি যখন স্থিতাবস্থায় থাকে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেশি হয়, তখন স্বাভাবিকভাবে মানুষের আয় উন্নতি তথা দেশের অগ্রগতি বৃদ্ধি পায়। এটি গত ১২ বছর ধরে হয়ে আসছে, সে কারণেই দেশ এগিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা বাংলাদেশের এই অগ্রগতিতে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। শুধু বাংলাদেশে অনেকে সেই অগ্রগতি দেখতে পায় না, দেখেও কোথায় কী গলদ আছে সেটা খুঁজে বের করার নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায়। দু-একটি সংবাদ মাধ্যমেও আমরা দেখতে পাই এ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয় এবং এই অগ্রগতি আসলে কতটুকু সে নিয়ে প্রশ্ন তোলার অপচেষ্টা চালু হয়। এই অপচেষ্টা আজকে হচ্ছে তা নয়, এই অপচেষ্টা গত সাড়ে ১২ বছর ধরেই হচ্ছে। এ সত্ত্বেও দেশ এগিয়েছে।’
গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই সরকারের বা যেকোনো দায়িত্বশীলের ব্যর্থতা, ত্রুটি নিয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি অগ্রগতিটাও মানুষকে জানাতে হবে। কারণ মানুষ যখন দেশকে নিয়ে আশাবাদী হবে তখনই দেশ ও সমাজ এগিয়ে যাবে। আশাহীন মানুষ যেমন এগিয়ে যেতে পারে না, আশাহীন সমাজও পারে না। দেশের অগ্রগতি যদি বিশ্বের পত্রপত্রিকায় প্রচারিত হয় অথচ আমাদের দেশে ঠিকভাবে না হয়, সেটি খুবই দুঃখজনক।’
সোমবার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, সচিব মো. মকবুল হোসেন এবং সংস্থা প্রধানবৃন্দ। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার সচিবের সঙ্গে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, বাংলাদেশ টেলিভিশন, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এবং চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের প্রতিনিধিবৃন্দ বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করেন।