বৃষ্টি হলেই সড়কডুবি

Slider জাতীয়

রাজধানীর রাজপথে হাঁটুজল। সেই জল কেটে মোটরসাইকেল এগোলেও অন্য অনেক যানবাহন চলতেই পারেনি। কয়েক দিনের দাবদাহে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসীর কাছে বৃষ্টি ছিল খুবই আকাক্সিক্ষত। কিন্তু যে স্বস্তির জন্য বৃষ্টির প্রার্থনা, সেই বৃষ্টিই বরং বাড়িয়ে দিয়েছে নগরবাসীর অস্বস্তি; ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে পথে বের হওয়া নগরবাসীর -এএফপি
advertisement
জলাবদ্ধতা। বর্ষায় এখন চেনা দৃশ্য রাজধানী ঢাকার। ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীবাসী ডুবে যাওয়া রাস্তাঘাটে চলাচলের বাস্তবতাও সহ্য করে নিয়েছে। প্রায় দুই যুগ ধরে এমন দুর্ভোগ রাজধানীবাসীর গা-সওয়া হয়ে গেলেও দুর্ভোগ লাঘবের উদ্যোগ ছিল সামান্যই। গতকাল দুই দফা বৃষ্টিতে সন্ধ্যানাগাদ রাস্তায় জমা পানি নামলেও নগরজুড়েই ছিল তীব্র যানজট।

রাজধানীতে গতকাল সকাল ও দুপুরে দুই দফায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঢাকায় অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পুবালি বাতাসের মিশ্রণের ফলে বজ্রমেঘ তৈরি হয়েছে এবং এ বজ্রমেঘ থেকেই বৃষ্টিপাত হয়েছে।’

এদিকে সকাল ৯টা-পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও-কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ এলাকায় অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ইয়াঙ্গুন উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং তা আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য আবহাওয়াগত পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে। আগামী তিন দিনে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

গতকালের বৃষ্টিতে মিরপুর, ধানমন্ডি, রামপুরা, বাড্ডা, উত্তরা, মগবাজার, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। ফলে সৃষ্টি হয় যানজটের। এতে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। এর আগে গত ১ জুন প্রায় তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে তীব্র জলজটের সৃষ্টি হয় রাজধানীতে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কোথাও সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ পানি জমে রয়েছে। মগবাজার থেকে মহাখালী সড়কের তেজগাঁও এলাকায় সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। ফলে এ সড়কে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। একইভাবে বৃষ্টির পানি জমেছিল বঙ্গবাজার এলাকায়। সেখানে রাত পর্যন্ত পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই আজিমপুর এলাকায় পানি জমে যায়। তবে অন্য সময় ধানমন্ডি এলাকায় পানি জমলেও গত কয়েকদফার বৃষ্টিতে এসব এলাকায় পানি জমেনি।

কেবল সড়কেই পানি জমেনি, অনেক স্থানে মানুষের বাসাবাড়িতেও পানি প্রবেশ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে নিচতলায় বসবাসকারী মানুষ পড়েছে বিড়ম্বনায়। তেজগাঁও এলাকার তেজকুনিপাড়ার অনেক বাসাবাড়ির নিচতলায় দীর্ঘক্ষণ পানি জমে ছিল। একইভাবে ঢাকার নিম্ন অঞ্চলের অনেক স্থানেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, যা কয়েকদিন স্থায়ী হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নাছিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা আবদুল্লাহ সবুজ বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতে এ এলাকার অনেক রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বেশ কয়েকদিন লাগে পানি নামতে। রয়েছে কাঁচা রাস্তাও। চলাচল করা যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *