মো: ইসমাঈল হোসেন (মাস্টার) শ্রীপুর থেকে ফিরেঃ অতিমারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বে বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ প্রায় দেড়বছর। এই সময়ে সরকারি নির্দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় অনুষ্ঠান বন্ধ। ২৬ মার্চে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে ২ কোটি টাকা নিয়ে গেছে বন্ধ থাকা কিছু প্রতিষ্ঠান। গাজীপুর জেলা পরিষদের দেয়া এই অনুদান গাজীপুর জেলায় ১০২টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল পেয়েছে। প্রতি স্কুল ২০ হাজার টাকা করে পাওয়াই ২ কোটি টাকার উপরে সরকারি অনুদান নিয়ে ইতিমধ্যে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরে ২ কোটি টাকা ২৬শে মার্চের অনুষ্ঠানের খরচ হলে পুরো জেলায় কত কোটি টাকার অনুদান সে তথ্য জানা যায়নি। এই অবস্থায় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় ১৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ লাখ টাকা করে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পে অনুদান দেয়া হয়। এছাড়াও ১৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সর্বনিন্ম ৫০ হাজার টাকা করে স্লিপ অনুদান দেয়া হয়। স্কুল বন্ধ থাকায় চক, ডাস্টার, আপ্যায়ণ সহ বিবিধ খরচের খাত বন্ধ হলেও খরচ হয়ে গেছে অনুদানের টাকা। স্কুল মেরামতের ক্ষুদ্র প্রকল্পে প্রতিটি স্কুলকে ২ লাখ করে টাকা দিলেও দৃশ্যমান তেমন কোন মেরামত হয়নি। খোজ নিয়ে জানা গেছে, পুরাতন ভবনকে সামান্য রংতুলি দিয়ে উজ্বল করে টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। সরেজমিন শ্রীপুর উপজেলার বাপতা ঈদগাহ মাঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের পুরানো গ্রীলে সামান্য রং লাগানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন জানান, ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ পেয়েছি। ভাওচারগুলো উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা আছে। ২ লাখ টাকার মধ্যে ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আমাকে দিলেও অর্ধেক নিয়ে গেছে। এ বেপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে গোপনে ডেকে নিয়ে কথা বলতে চান প্রধান শিক্ষক। একটি স্থানীয় গোপন সূত্র বলছে, এই ঘটনায় সাংবাদিক পরিচয়ে একাধিক ব্যাক্তি স্কুলে আসলে প্রধান শিক্ষক তাদের গোপনে ডেকে ম্যানেজ করেন। তথ্য রয়েছে বিষয়টিকে পুঁজি করে স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক একজন সভাপতি অতিরঞ্জিত তথ্য সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহের চেষ্টা করেছেন।
এই বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকার চেক প্রধান শিক্ষক নিয়েছেন। কাজ ঠিকমত হয়েছে কিনা প্রকৌশলী বলতে পারবেন। আমার দপ্তর থেকে কোন ধরনের দূর্নীতি করা হয়নি। প্রয়োজনে খোজ খবর নিয়ে দূর্নীতির প্রমান পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের একটি সূত্র জানায়, সারা জেলায় সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্প ও স্লিপ অনুদান যথারিতী দেয়া হয়। স্কুল বন্ধ থাকায় এই অনুদানগুলো যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা নিয়ে তদারকি করা খুবই জরুরী।
শিক্ষানুরাগীরা বলছেন, করোনা কালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ এর মধ্যে সরকারি অনুদান কিভাবে খরচ করা হলো সে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী।