করোনাভাইরাসের মহামারী সংক্রমণরোধে গুরুত্বপূর্ণ চারটি শর্ত সাপেক্ষে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) জানিয়েছে। মঙ্গলবার ইউজিসির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সোমবার পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও ভিসিদের সাথে অনুষ্ঠিত এক জরুরি মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বিজ্ঞপ্তিতে ইউজিসি বলেছে, শর্ত সাপেক্ষে দেশের সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে সরাসরি ও অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের পরামর্শে পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করতে হবে। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯-এর টিকা দেয়ার আওতায় নিয়ে আসাসহ চারটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বৈঠকে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল ওই সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মো: সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, প্রফেসর ড. মো: আবু তাহের, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও মহাসচিব, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সচিব যুক্ত ছিলেন।
ইউজিসি থেকে দেয়া মঙ্গলবারের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সোমবার সভার শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখা ও খুলে দেয়ার বিষয়ে ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সচল ও নিরাপদ রাখার স্বার্থে বাস্তবতার নিরিখে চারটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেগুলো হলো-
১. প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯-এর টিকাদানের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই টিকা প্রদানের কর্মসূচি আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের দিয়ে শুরু হবে।
২. ইতোমধ্যে ইউজিসির দেয়া শর্তসাপেক্ষে সরাসরি উপস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণ ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য যে দু’টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে অনুমোদনের প্রেক্ষিতে কার্যকর করে বিষয়বস্তুর ওপর চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করা হবে।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯-এর টিকাদান সম্পন্ন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়া হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সরাসরি উপস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম আগের মতো চালু হবে।
৪. কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব সক্ষমতা ও বাস্তবতা অনুযায়ী একটি রিকভারি প্ল্যান প্রস্তুত করে তা বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এই রিকভারি প্ল্যানের একটি সাধারণ গাইড লাইন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রস্তুত করে বিশ্ববিদ্যালগুলোয় পাঠাবে।