‘আমরা চাই আপনাদের দরিদ্র রিকশাওয়ালার সন্তানেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক, পয়সা লাগবে না। আমরা ব্যবস্থা করবো। আপনাদের ব্যথা সরকার বোঝে না। রিকশাতে মোটর লাগাতে দেওয়া উচিত। এতে আপনার কষ্ট হবে না। আর টাকার ব্যবস্থা করে দিতে চাই যেন রিকশার মালিক হতে পারেন।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ফেরিওয়ালা ও ফুটপাতের ছোট দোকানদারদের জন্য বিশেষগণ স্বাস্থ্যবীমা ও খাদ্য সহয়তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিকশাচালকদের উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘চিকিৎসাতে আপনাদের অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। আমরা এমন একটা ব্যবস্থা করতে পারি ডাক্তার দেখাতে আপনার এক পয়সাও খরচ হবে না। এখানে বিনা পয়সায় ডাক্তার দেখানো হবে। এজন্য মাসে ২০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তাহলে প্রসবকালীন সকল সুবিধা পাবেন বিনা পয়সায়। চোখের চিকিৎসা করা হবে বিনা পয়সায়। কোনো রোগের জন্য হাসপাতালে বিনা পয়সায় ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে পারবেন। এক্সিডেন্ট বা অন্য কিছুর জন্য রক্তের প্রয়োজন হলে বিনা পয়সায় রক্তের ব্যবস্থা করা হবে। বাচ্চার মুসলমানী করা হবে বিনা পয়সায়। এছাড়াও আরও অনেক সুযোগ আছে। এই জন্য মাসে ২০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকতে চাই। কিন্তু বিড়ি সিগারেট পান খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। আমরা আরেও একটি জিনিস চাই, আপনাদের সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাক। এই দেশ শুধু বড়লোকের না। এই দেশ সকলের দেশ। আমরা আমাদের অধিকার চাই।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সব রিকশাচালক যদি একসাথে রাস্তায় নামে তাহলে সরকারই থাকবে না। সরকারের চাইতে রিকশাচালকরা বেশি শক্তিশালী। সেই রিকশাচালকরা খাইতে পায় না, চিকিৎসা পায় না, ঘর-বাড়ি নাই, থাকার জায়গা নাই। জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাদের চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগতভাবে একটা ব্যবস্থা করছে।আপনাদের স্বাস্থ্য বীমার জন্য ২০০ টাকা লাগবে। সরকার যদি টাকা দেয় তাহলে স্বাস্থ্য বিমা ১০০ টাকায়ও হতে পারে। সরকার যদি গার্মেস মালিকদের ১০ হাজার কোটি টাকা দিতে পারে তাহলে আপনাদের জন্য ১০০ টাকা করে দিতে পারবে না?’
তিনি বলেন, ‘দেশ হতে হবে গরিব মেহনতী মানুষের। বড়লোকদের দেশ হওয়া চলবে না। ওই দেশ মানি না। আপনারা ঠিক থাকলে ওই রকম দেশ চলতে দেব না।’
অনুষ্ঠানের সংগঠক মোজাম্মেল মাস্টার বলেন, ‘আপনারা আমার ডাকে এসেছেন। আমাকে ভালোবাসেন বলেই এসেছেন। আপনারা বলেছেন আমরা একবার সরাসরি ডা. জাফরুল্লাহকে দেখতে চাই। কারণ উনি আমাদের এলাকার অসংখ্য মসজিদে ইমাম মুয়াজ্জিনদের কম্বল বিতরণ করেছেন। আপনারা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এসেছেন এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। ডা. জাফরুল্লাহ আপনাদের জন্য চিকিৎসার বিশেষ ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আপনারা জানেন যে উনি আপনাদের কথা ভাবেন। আপনারাও ওনার পাশে থাকবেন।’
রিকশা/ভ্যান চালক, হকার ও ফুটপাতের ছোট দোকানদের বিশেষ গণস্বাস্থ্য বীমার জন্য অনুষ্ঠানে সংগঠিত করেন ডেমরা মীর হাজারিবাগ এলাকা থেকে মোজাম্মেল মাস্টার, খিলগাঁও রামপুরা থেকে খুশির ঠিকানা সংগঠন ও মোহাম্মাদপুর থেকে অ্যাডভোকেট রুনা লায়লা।গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মনজুর কাদির আহমেদ, গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারের সমন্বয়কারী ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ডা. আরমান, ডা. বদরুল আলম, সহকারী অধ্যাপক নাসিমা ইয়াসমিন প্রমুখ।