পূর্ণিমা-চন্দ্রগ্রহণ যোগ থাকায় ভয়ংকর হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

Slider সারাদেশ


ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের বর্তমান গতিপথে বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তি পেলেও, উল্টোচিত্র বিরাজ করছে ভারতে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যাতে এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা ও উদ্বেগ। এদিকে সোমবার রাতে ইয়াসের প্রভাবে বাংলাদেশে ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে।

গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে প্রথম আঘাত হেনে সুন্দরবন হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ–পশ্চিম উপকূল পেরোনোর সময় ধ্বংসযজ্ঞ রেখে গিয়েছিল।

অপরদিকে আম্পানের চাইতেও ইয়াস আরও ভয়ংকর হতে পারে এমন আশঙ্কা জানিয়ে এরিমধ্যে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্যটির আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ক্রমেই শক্তি বৃদ্ধি করে পশ্চিমবঙ্গের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি। আর এরই মধ্যে অপেক্ষা করছে পূর্ণিমা ও পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ।

এই দুই কারণে ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। যার প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ছয় ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার বেগে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়েছে। এটা আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় শক্তি সঞ্চয় করে ইয়াস প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। পরের ২৪ ঘণ্টায় আরও শক্তি নিয়ে হয়ে উঠবে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়।

পূর্ণিমার প্রভাবে বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে শুরু হবে জোয়ার। সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছবে জোয়ার। তারপর থেকে আবার পানির উচ্চতা নামতে শুরু করবে।

এরপর আবারও শুরু হবে জোয়ারের প্রভাব। রাত ১১টা ৪ মিনিট নাগাদ আবারো সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছবে জোয়ার। এ সময় পানির উচ্চতা সর্বাধিক সাড়ে ৫ মিটার উঠতে পারে।

অন্যদিকে বেলা ৩টা ১৫ মিনিট থেকে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী হবে বিশ্ব। যা চলবে সন্ধ্যা ৬টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত। এটিই চলতি বছরের প্রথম এবং শেষ ‘ব্লাড মুন’।

পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ইয়াসের উপকূলে উঠে আসার সময়ে হেরফের হলেই বিপদ বাড়বে। কারণ সকাল অথবা একটু রাতের দিকে যদি ইয়াস স্থলভাগ স্পর্শ করে তাহলে তার প্রভাব অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হবে বলেই মনে করছেন তারা।

আলিপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা জি কে দাস বলেন, “পূর্ণিমা ও চন্দ্রগ্রহণের বিষয় আমাদের মাথায় আছে। নির্দিষ্ট কোন সময়ে ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়বে সেটি এখনও নির্দিষ্ট নয়। তবে জোয়ারের সময় ইয়াস আছড়ে পড়লে, সেটি মারাত্মক হবে”।

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগের দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এর গতিবেগ আরও বাড়বে। ঘণ্টায় ১১৮-১৮৫ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়ার কথা ইয়াসের। তাই আনুমানিক সময়ের আগেই সেটি উপকূলে উঠে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারে উপকূলের এলাকাগুলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *