হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে তরুণীকে ‘ধর্ষণ’, আইনগত ব্যবস্থা হয়নি

Slider নারী ও শিশু

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রোগী ও স্থানীয়দের।

প্রত্যক্ষদর্শী আয়শা আক্তার ও ফয়সাল জানান, ধর্ষণের শিকার তরুণীর সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। রাত ১২টার দিকে ওই তরুণী হাসপাতালে গেলে মাস্ক পরা এক যুবক তাকে সহযোগিতা করতে আসেন। তিনি মনে করেন, ওই যুবক হাসপাতালের দায়িত্বরত কেউ। তরুণীর সঙ্গে ওই যুবক এমন ব্যবহার করেছেন যা দেখে সবার মনে হয়েছে তার নিকটাত্মীয়।

তারা আরও জানান, রাত গভীর হলে রুমের লাইট এবং দরজা বন্ধ করেন যুবক। সে সময় তারাসহ মহিলা ওয়ার্ডে তিনজন রোগী ছিলেন। আনুমানিক রাত ৪টার দিকে তরুণীকে ধর্ষণ করেন ওই যুবক। চেতনা ফিরে পেলে তার চিৎকারে অন্যরা যখন ঘুম থেকে জেগে যায়, তখন সেই যুবক পালিয়ে যান। সকালে ওই তরুণী ফরিদগঞ্জ থানায় ফোন দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান। ধারণা করা হচ্ছে, তরুণীকে চেতনানাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছিল।

অভিযোগ উঠেছে, নারী ওয়ার্ডে পুরুষ লোক থাকার বিধিনিষেধ থাকলেও কর্তব্যরত নার্স অথবা ওয়ার্ডবয়ের অবহেলায় সেই যুবক সেখানে ছিলেন। ওই রাতে দায়িত্বরত ওয়ার্ডবয় ছিলেন মনসুর আহম্মেদ এবং নার্স ছিলেন উম্মে আতিয়া।

নার্স উম্মে আতিয়া ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘যুবকটি মেয়েটির সঙ্গে এমন আচরণ করেছে তাতে সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না। একজন আত্মীয়ের মতো তাকে ধরেছে তখন মেয়েটি কিছুই বলেনি।’

এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও ডা. মো.কামরুল হাসান বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই তরুণীর কোনো অভিযোগ না থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে নির্যাতিতা আমাদের ফোন করে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে আমাদের ফোর্স হাসপাতালে গিয়ে খোঁজখবর নেয়। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করলেও লিখিত অভিযোগ না থাকায় আমরা কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারিনি।’

এ বিষয়ে ইউএইচও মো. আশরাফ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা হাসপাতালে ঘটেনি। তবে এ ঘটনাটি শুনেছি। পরদিন মেয়েটি চলে যেতে চাইলে আমরা মেয়েটিকে যেতে দেইনি। পরবর্তীতে মেয়েটি যেহেতু অভিযোগ দেয়নি, তাই তাকে চলে যেতে দেই। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে লোকটিকে চিহ্নিত করেছে।’ সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। জেনে তারপর বলতে পারব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *