ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার একের পর এক ভুল করছে বলে মনে করছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গতকাল রোববার ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল নাগরিক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার একের পর এক ভুল করছে। ঈদের আগে গণপরিবহন বন্ধ রাখা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। ঈদের সময় মহিলারা ঝুলে ঝুলে বাড়ি যায়, এতবড় অন্যায় কোনোদিন হয় নাই। সরকারের উচিৎ হবে আন্তঃজেলা বাস ট্রেন চালু করা ও বিনা পয়সায় ঢাকায় ফেরার ব্যবস্থা করা। ঢাকায় ফেরা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করা।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে ফিলিস্তিনে নারী, শিশুসহ মানুষ হত্যা, নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা চলছে। তাদের হাতে সংবাদ মিডিয়াও রক্ষা পায় নাই। আমরা কোনো প্রতিবাদ করতে পারি নাই। একটা প্রতীকী প্রতিবাদও করি নাই। মুসলিম রাষ্ট্রের কেউ কেউ ইহুদিদের নির্মতায় নীরব। এ সময়ে যদি মুসলিম রাষ্ট্রগুলো নিজেদের ঝগড়া ভুলে গিয়ে এক হয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত তাহলে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া যেত।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘মওলানা ভাসানী নিজের দেশের সংস্কৃতি, স্বার্থ নিয়ে মজলুম জনগনের সমস্যা নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। অন্যদিকে পৃথিবীর জায়গায় অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছেন। আজ অন্তরে মওলানাকে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’ আলোচকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ইসরায়েলের মদদদাতা ভারত আর দরদ। মোসাদের যন্ত্রপাতি অস্ত্র কারা ব্যবহার করছে এ ব্যাপারে কেউ প্রশ্ন তুলছেন না।’
কানাডা থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সভাপতি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দূরদর্শী মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী মনে করতেন ভারত শুধু ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে শুধু আমাদের পানি বন্ধ করবে না, ভবিষ্যতে অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদী গুলিতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করবে।’
জাতিসংঘের সাবেক পানি বিশেষজ্ঞ ড. এস আই খান বলেন, ‘একটা দেশ স্বাধীন হতে পারে, কিন্তু নিজস্ব সম্পদের ওপর অধিকার না থাকলে সে দেশ সার্বভৌম নয়। নদীতে প্রবাহ না থাকায় উপকূলীয় অঞ্চলের পানি লবণাক্ত হয়ে যাচ্ছে। অথচ ভারত বাংলাদেশকে পানি শূন্য করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ৫৪টা অভিন্ন নদীর মধ্যে ৫২ নদীতেই ভারত বাঁধ দিয়েছে। আমাদের একটিই পথ খোলা আছে জনমত তৈরি করে, আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করে ন্যায্য পানি আদায় করে নেওয়া।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নদীর পানি পাওয়ার অধিকার আমাদের প্রাকৃতিক অধিকার। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে আমরা পাচ্ছি না।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘ভাসানির মতো একজন মজলুম জননেতা আজ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দরকার।’
এখানে আরও বক্তব্য দেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী ইমাম (নিউয়র্ক), মশিউর রহমান জাদু মিয়ার কন্যা রিটা রহমান (নিউয়র্ক), নিউনেশন পত্রিকার সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র চিন্তার অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।