রাতুল মন্ডল নিজস্ব প্রতিবেদকঃ একমাত্র শিশু সন্তানকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেড়িয়ে পড়েন জীবিকার তাগিদে মা হামিদা খাতুন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পযন্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঝিয়ের কাজ করে তিনি। সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার উজিলাব গ্রামে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে রশিতে বাঁধা রয়েছে ফুটফুটে শিশু আলমগীর। শরিরে নেই তেমন কোন জামাকাপড়। অযত্ন আর অবহেলায় এভাবে কাটছে প্রতিবন্ধী শিশুর জীবন। শারীরিক প্রতিবন্ধী আলমগীর হোসেন (১০) উপজেলার উজিলাব গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের একমাত্র ছেলে। মা হামিদা খাতুন সারাদিন মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। তাই একমাত্র শিশু পুত্রকে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেড়িয়ে পড়েন জীবিকার সন্ধানে। সারাদিন মানুষের বাড়িতে কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন তিনি। বাড়ি ফিরে সন্তানের পায়ের রশির বাঁধন খুলে ঘরে তুলে নেন। এভাবে পায়ে রশি বেঁধে চলছে দীর্ঘ আট বছর।
প্রতিবন্ধী শিশুর খালা আয়েশা আক্তার জানায়,
জন্মের পর থেকে ফুটফুটে শিশুটি বেড়ে উঠছিলো সুন্দর ভাবে। ছ’মাস বয়সে শিশুটিকে নিয়ে তার মা বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। বেড়াতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। পুকুরে পড়ার পর থেকে তার শরিরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এর পর থেকে শিশুটি শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়। প্রতিবেশী চাচা ফাইজুদ্দিন জানায়, শিশুটি এদিক ওদিক চলে যাওয়ার কারণে তার মা রশিতে বেঁধে কাজ করতে চলে যায়। সারাদিন গাছের সঙ্গে বাধাঁ থাকে শিশুটি। সন্ধ্যায় তার মা এসে ঘরে নেয় তাকে। সরকারি সামান্য সহযোগিতা দিয়ে শিশুটির চিকিৎসা করাতে পারছে না তার মা। আলমগীর চিকিৎসার খরচ চালাতে ব্যর্থ হয়ে আট বছর ধরে শিশুটিকে গাছের সঙ্গে রশিতে বেঁধে রাখে তার মা।
শিশুটির মা হামিদা খাতুন জানায়, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে শশুর বাড়ির লোকজনের অত্যাচারে একমাত্র শিশু পুত্রকে নিয়ে স্বামীর ভিটেমাটি ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসি। সারাদিন মানুষের বাড়িতে কাজ করেনএকবেলা ভাত জোটে তো অন্য বেলা জোটে না। ছেলেকে চিকিৎসা করানোর মতো অর্থ আমার নেই। আমার এই সন্তানের চিকিৎসা করার জন্য আমি সমাজের বিত্তবানদের প্রতি সাহায্যের আবেদন করছি।
শ্রীপুর পৌর মেয়র মো.আনিছুর রহমান বলেন,
প্রতিবন্ধী শিশু আলমগীরকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেয়া হয়েছে। পৌরসভা থেকে আলমগীরের পরিবারের জন্য সরকারি সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে।