গঙ্গার জলে কয়েক ডজন লাশ ভাসার খবর ছড়িয়ে পড়ায় ভারতের উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাদের আশঙ্কা, করোনা আক্রান্তদের মৃতদেহ সৎকার না করেই গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল রোববার সকালে হামিরপুরের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা গঙ্গার জলে ৪০টিরও বেশি মৃতদেহ ভাসতে দেখেন। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, হরিমপুরসহ আশপাশের এলাকায় করোনা সংক্রমণে হার অত্যন্ত বেশি। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পরিমাণ এতটাই বেশি যে, শ্মশানে দেহ পোড়ানোর ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় ফাঁকা মাঠে মৃতদেহ পোড়ানো হচ্ছে। অনেকে দেহ সৎকার না করে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিচ্ছেন।
এ ঘটনার জন্য অনেকে আবার স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেহ ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি, বেশ কিছু গ্রামের মানুষ শ্মশানে না পুড়িয়ে ফাঁকা মাঠে দেহ পোড়াচ্ছে। সবকিছু দেখেও চুপ রয়েছে প্রশাসন। কত দেহ পোড়ানো হচ্ছে, সেই বিষয়েও প্রশাসনের কাছে কোনো হিসেব নেই বলে দাবি করছে তারা।
এ ভয়াবহ অবস্থা প্রসঙ্গে চৌসার জেলা কর্মকর্তা অশোক কুমার ভারতীয় বলেন, ‘প্রায় ৪০-৪৫ টি লাশ ভাসতে দেখা গেছে। লাশগুলো নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। এ বিষয়ে হামিরপুরের অ্যাসিট্যান্ট পুলিশ সুপার অনুপকুমার সিং জানান, কানপুর ও হামিরপুরের সীমানা বরাবর গঙ্গা নদী রয়েছে। এই নদীতে মৃতদেহ ভাসিয়ে দেওয়া আশপাশের গ্রামের পুরোনো রীতি। মাঝে মধ্যেই নদীতে একটা-দুটো দেহ ভাসতে দেখা যায়। তবে মহামারিতে যেভাবে লাশের স্তূপ জমতে শুরু করেছে, এর থেকেই বোঝা যায় মৃত্যুর হার কত বেশি।
তিনি আরও জানান, আতঙ্কের বশেই মৃতদেহ না পুড়িয়ে নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে প্রশাসনের ভূমিকা কী? এই বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। উল্লেখ্য, ভারতে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন প্রায় তিন লাখ কোভিডের মামলা রেকর্ড করেছে এবং গত সপ্তাহে রেকর্ড মৃত্যুর পরিমাণ ছিল ৪ হাজারেরও বেশি।