হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে যে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে তা বন্ধ করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
মঙ্গলবার রাতে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে হেফাজতের একটি প্রতিনিধি দল যায়। সেখানে হেফাজতের পক্ষ থেকে চারটি আবেদন জানানো হয়।
এর মধ্যে রয়েছে গত মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের কারণে যেসব আলেম–ওলামাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়, পবিত্র রমজান মাসে অজানা আতঙ্কে দিন পার করছেন আলেম–ওলামারা। তাঁদের গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়।
হেফাজত নেতারা বলেন, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণগ্রেপ্তার চলছে। এতে অনেকে আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
২০১৩ সালে হেফাজতের নেতাকর্মীদের নামে যেসব মামলা হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়।
এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসাগুলো দ্রুত খুলে দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগ প্রত্যাশা করেন হেফাজত নেতারা।
হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির মহাসচিব ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদির নেতৃত্বে সংগঠনটির নেতারা মঙ্গলবার রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় যান। বের হন রাত ১২টার দিকে।
প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন হেফাজত নেতা ও বেফাকের মহাসচিব মাহফুজুল হক, অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী, আতাউল্লাহ হাফিজি। মাহফুজুল হক কারাবন্দি হেফাজত নেতা মামুনুল হকের ভাই।
বৈঠকের পর নুরুল ইসলাম জেহাদি উপস্থিত সাংবাদিকেদের বলেন, গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মাদ্রাসাগুলো খুলে দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন তাঁরা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে হওয়া বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনার পর সরকার হেফাজতে ইসলামের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়। মাসখানেক ধরে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরপর একাধিকবার হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গ্রেপ্তার বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে সর্বশেষ গত রোববার রাতেও হেফাজতের সাবেক দুই যুগ্ম মহাসচিব মাঈনুদ্দীন রুহী ও মুফতি ফয়জুল্লাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসায় সাক্ষাৎ করেছিলেন।