কলকাতা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে উত্তাপের কমতি ছিল না। সবশেষ রঙ্গমঞ্চ জমে উঠে নন্দীগ্রামকে ঘিরে। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে রুদ্ধশ্বাস লড়াই দল বদল করে বিজেপির টিকিট কাটা শুভেন্দু অধিকারীর। প্রাথমিকভাবে তৃণমূল নেত্রী জিতেছেন বলে খবর ছড়ালেও, গণনা শেষে দেখা যায় জয়ী হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। মমতাকে দেড় হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না মমতা? এ বিষয়ে কী বলছে ভারতীয় সংবিধান?
ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, দল সরকার গঠন করলে এবং সেই দলের নির্বাচিত সদস্যরা যদি কাউকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সমর্থন করে, সেক্ষেত্রে তিনি মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাবেন। তবে আইনি কিছু প্রক্রিয়া তাকে মানতে হবে। খবর ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ভারতীয় সংবিধানের ১৬৩ ও ১৬৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশটির কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে হলে তাকে ভারতের নাগরিক হতে হবে এবং বয়স হতে হবে ২৫ বা তার বেশি। তাকে রাজ্যের বিধানসভার সদস্য হতে হবে। আর বিধানসভার সদস্য না হয়েও কেউ যদি মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন, তবে তাকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যপালের অনুমতি নিতে হবে।
কেউ হেরে যাওয়ার পরও তার দল যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় এবং দলের নির্বাচিত সদস্যরা যদি তাকে নেতা নির্বাচিত করেন, তাহলে তার মুখ্যমন্ত্রী হতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
তবে ভোটে না জিতেও মুখ্যমন্ত্রী হলে তাকে ওই পদে বসার ১৮০ দিনের মধ্যে কোনো একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। তা না পারলে ছেড়ে দিতে হবে পদ।
প্রসঙ্গত, ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাকাঠামোর পরিবর্তন আনেন তৃণমূল নেত্রী। সেই সময় তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। ২০১১-র ভোটে নিজে লড়েননি। তবে তার দল ঐতিহাসিক জয়লাভের পর তাকে নেত্রী নির্বাচিত করে। এরপর লোকসভা থেকে পদত্যাগ করেন মমতা। ভবানীপুরে সুব্রত বক্সির জেতা আসনে উপ-নির্বাচনে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হন। তারপর ২০১৬ সাল পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হন। ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো মমতার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে সে অর্থে কোনো বাধা নেই।