করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও গত এপ্রিল মাসে দেশে ৩৭১টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ১৩৭টি। আর দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩১টি। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী শিশু ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯ জন।
শনিবার তথ্য মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এমএসএফ এসব তথ্য জানায়। তারা নিজেরা ও বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে। সংগঠনটি বলছে, করোনা মহামারির মধ্যেও দেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা যেমন ধর্ষণ, হত্যা ও পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনার বেড়েই চলেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্ষণের শিকার ১৩৭ জনের মধ্যে ৭৬ জন শিশু ও কিশোরী। এপ্রিলে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে ১৫টি। যৌন হয়রানি ২২টি ও শারীরিক নির্যাতনের ২৯টি ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে অ্যাসিড নিক্ষেপে আক্রান্ত হয়েছেন ২ নারী। এ ছাড়া ৩২ জন কিশোরীসহ মোট ৬৯ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। আর অপহরণের শিকার হয়েছে তিন শিশু, চার কিশোরী ও দুই নারী। অপর দিকে ১১ শিশু নিখোঁজ রয়েছে। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে ৭৫ জন নারী ও শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন বলছে, গণমাধ্যম সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পারিবারিক বিরোধ, প্রতিশোধ, যৌতুক, তালাক, জমিসংক্রান্ত বিরোধ প্রভৃতি কারণে এ হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে। এপ্রিল মাসে সামাজিক বিরোধ ও ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনায় ৯টি পরিবারকে একঘরে করে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আট নবজাতককে বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়কে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সংগঠনটি বলছে, নবজাতকদের পাওয়ার ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে দত্তক দেওয়ার মধ্যেই এর সমাধান করার যে চেষ্টা হয়, তা অনাকাঙ্ক্ষিত।
এমএসএফের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এপ্রিল মাস নিয়ে বলা হচ্ছে, এ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতন, কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটেই চলেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা ও গ্রেপ্তার, সীমান্তে হত্যা-নির্যাতন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, সর্বোপরি নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।