ড. বিজন কুমার শীল: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঈদের আগে ও পরে কয়েক দিন গণপরিবহন বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন অণুজীব বিজ্ঞানী ও সার্স ভাইরাসের কিট উদ্ভাবক অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, গণপরিবহন বন্ধ রাখা অনেক কষ্টের। অনেক গরিব মানুষের কর্ম এর সঙ্গে জড়িত। তারপরও প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ রুখতে এই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। কারণ, ঈদে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ বাড়ি যায়। কেউ যদি ঢাকা থেকে এই ভাইরাসটি বহন করে নিয়ে যায়, তাতে তার পরিবার বিশেষ করে বয়স্ক বাবা-মা বা অন্য সদস্যদের সংক্রমণ করতে পারে। এতে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।
সিঙ্গাপুর থেকে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে করোনাভাইরাস শনাক্তের ‘জি র্যাপিড ডট বøট’ কিট উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল এসব কথা বলেন। আলাপকালে তিনি বলেন, সরকারকে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করতে হবে। এক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। কারণ মানুষের বিবেক কাজ না করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। সুতির মাস্ক সব থেকে ভালো। মুখ থেকে আর্দ্রতা বের হচ্ছে। সেটা সুতির মাস্কের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যেসব ছিদ্র তা বøক করে দেয়। ভাইরাস তখন ঢুকতে পারে না। বাজারে যে মাস্ক পাওয়া যায়, তা মুখের সেই আর্দ্রতা শুরুতে গ্রহণ করে না। এ জন্য বলা হয়েছে যে, সুতির মাস্ক সব থেকে ভালো। শক্তিশালী এই ভাইরাসকে প্রতিহত করতে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ঈদের ছুটিতে দূরপাল্লার অনেক গাড়ি ঢাকা ছেড়ে যায়। আবার ঢাকায় ফেরে। অনেক এসি গাড়িও চলাচল করে। এসি যানবাহন একটি বড় সমস্যা। তাছাড়া যানজটে গাড়িগুলো আটকা থাকলে গাড়িতে অনেকেই মাস্ক খুলে বসে থাকতে পারেন। ওই ব্যক্তির আশপাশের লোকজনও করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। এসব বিবেচনায় নিয়ে এই ঈদে গণপরিবহন বন্ধ রাখলে সবার জন্যই ভালো হয়।
সার্স ভাইরাসের কিট উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল আরও বলেন, গত বছর বাংলাদেশে আসা করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে আসার পর পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়। গণপরিবহনও চালু করা হয়। এটাই সর্বনাশ হয়েছে। করোনাকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে অন্তত আরও একটি বছর পর্যটন কেন্দ্রগুলো সিলগালা করে দেওয়া উচিত ছিল। মনে রাখতে হবে, গত বছরের করোনা ভাইরাসের গতিবিধি, আর আজকের ভাইরাসের গতিবিধি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটাকে আটকানো বেশ জটিল। এটা অনেক বেশি শক্তিশালী ও প্রাণঘাতী। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সুতি কাপড়ের মাস্ক বেশি ভালো। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে।