ভারতের করোনা পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ বললেও কিছুই বলা হয় না। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশে অসহায়ভাবে মানুষ মরছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপযুক্ত চিকিৎসা হচ্ছে না। হাসপাতালের বাইরেই পড়ে থেকে থেকে মৃত্যু ঘটছে। ভারতের এই দুর্দশার চিত্র এখন বিদেশের সংবাদমাধ্যমের আলোচনার বিষয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও ভারতের করোনার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির খবর প্রকাশিত হচ্ছে।
ভারতের আজকাল পত্রিকায় বলা হয়েছে, কৃষক আন্দোলনের স্মৃতি এখনো টাটকা। ওই সময় মার্কিন পপতারকার টুইট নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা বিশ্ব। সবার নজর ছিল দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর। সেই ঘটনার পর আবারো আন্তর্জাতিক মিডিয়ার আলোচনায় ভারত। তবে বিষয় এবার করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যু।
পত্রিকাটি জানায়, ব্রিটেনের এক নামী সংবাদপত্রে দিল্লির তেগ বাহাদুর হাসপাতালের ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিস্তারিতভাবে লেখা হয়েছে কীভাবে কোভিড আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ঠাঁই পাচ্ছেন না। ৩৫ ডিগ্রি গরমে কম্বল জড়িয়ে পড়ে আছেন তারা। অক্সিজেনের সঙ্কটে রোগীর মৃত্যুর কথাও তুলে ধরা হয়েছে। ছ’ ঘণ্টা শ্বাসকষ্টে ভোগার পর অক্সিজেন পাওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। মৃতের পরিজনদের শোকপ্রকাশ করার ফুরসতটুকুও নেই বলে লেখা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
এতে বলা হয়, দৈনিক মৃত্যুর বাড়বাড়ন্তে শ্মশান, কবরস্থানেও যে ঠাই নেই, সে কথাও তুলে ধরা হয়েছে। দিল্লিতে একসঙ্গে শ’ খানেক চিতা জ্বলার একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে। করোমার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভারতের বেহাল দশা এখন দেশীয় শুধু নয়, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার খবর।
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে ’চিতার আগুনে জ্বলছে ভারত’ শীর্ষক একটি পোস্টে বলা হয়েছে, দিল্লিতে শ্মশান আর কবরস্থানগুলাতে জায়গা হচ্ছে না লাশ দাফন ও সৎকারের। মূল শশ্মানে জায়গা না হওয়ায় অনেক অস্থায়ী শশ্মান গড়ে উঠেছে। গাড়ির পার্কিংয়ে, রাস্তার ওপর পুড়ানো হচ্ছে লাশ। কবরস্থানে রাত-দিন কবর খুড়তে খুড়তে হয়রান গোরখোদকেরা।
এতে বলা হয়, ভারতের দিল্লির এক বাসিন্দা নীতিশ কুমার করোনায় মারা যাওয়া মায়ের লাশ দুই দিন ধরে বাড়িতেই রেখে দিছিলেন। দাহ করার জন্য শ্মশানে এক টুকরো জায়গা পান নাই তিনি। শেষমেশ গাড়ি রাখার এক পার্কিং-এ অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠা শশ্মানে দাহ করা হয় তার মাকে।
এনডিটিভিকে তিনি বলেন, ‘কোথায় না গেছি। কিন্তু কিছু না কিছু কারণে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। চিতা জ্বালানোর জন্য কাঠ নেই বলেও শুনতে হয়েছে।’