এতিমখানার শিশুরাও সংকটে

Slider বাংলার আদালত

করোনাভাইরাসের এই সময়ে সংকটে এতিমখানার শিশুরাও। করোনার কারণে এমনিতে ঘরবন্দি মানুষ। তারপর আবার টানা লকডাউন। এসব কারণে মানুষের দান এবং সদকায় চলে এমন এতিমখানাগুলোর শিশুদের জন্য সংকট তৈরি হয়েছে। প্রতিবছর রমজানে তাদের মুখে হাসি ফুটলেও এবার দেখা যাচ্ছে কষ্টের ছাপ। এতিমখানার দায়িত্বরতদের পোহাতে হচ্ছে বেগ। কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে এসব দুস্থ এতিম শিশুদের। প্রথম দিকে অল্প কিছুসংখ্যক মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও এখন আর দেখা যাচ্ছে না তাদের।
ফলে এসব এতিম শিশুর খাবার যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

রাজধানীতে করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাদ্রাসা বন্ধ হওয়ায় সাধারণ সব ছাত্ররা ছুটিতে আছে। কিন্তু এতিমখানা বন্ধ নেই। এই দুস্থ এতিম শিশুদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তবে কিছুসংখ্যক শিশু যাদের বাবা-মা, পরিবার আছেন তারা গ্রামে গিয়েছে। আর যাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তারা এতিমখানায় দিনযাপন করছে। এদিকে যারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে, যারা সচ্ছল তাদের বেতন দিয়েই এতিম শিশুদের চালানো হতো। কিন্তু এখন আর সম্ভব হচ্ছে না মাদ্রাসা বন্ধ থাকার কারণে। তবে এতিমখানার দায়িত্বপ্রাপ্তরা শিশুদের আগামী মাসের খাবারের ব্যবস্থা কীভাবে করবেন সেটি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন।

ধানমন্ডি ঝিগাতলার তাহফীজুল কুরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, আমার এতিমখানায় মোট ২৫ জন এতিম শিশু আছে। তাদের মধ্যে গরিবও আছে এতিমও আছে। এদের মধ্যে এখন ১১ জন আছে। বাকি সবাই বাড়িতে গিয়েছে। মাদ্রাসাও বন্ধ। অন্যান্য রমজানের তুলনায় এইবার খুবই খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। খুব কম সংখ্যক মানুষ দানের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তবে আমরা নিজেরা তাদের ভালো রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

যাত্রাবড়ী মারকাজুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, মাদ্রাসায় যারা সচ্ছল ছাত্র আছে তাদের বেতন দিয়ে এই এতিম শিশুদের চালানো হয়। এই এতিমখানায় মোট ১৮ জন এতিম শিশু আছে। এই মুহূর্তে আছে ১০ জন। বাকিরা তাদের বাড়িতে। এতিম শিশুদের চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। এ বছর রমজানে লকডাউনের কারণে মানুষ খোঁজ-খবর কম নিচ্ছেন। এখন আমরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতা নিচ্ছি। কিন্তু তাদের ভালো খাবার দিতে পারছি না।

মিরপুর রূপনগর ইস্টার্ন হাউজিংয়ের একটি মাদ্রাসার এতিমখানা শাখায় ১২ থেকে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। বাকিরা ছুটিতে যার যার বাড়িতে চলে গেছে। ওই মাদ্রাসার পরিচালক জানিয়েছেন, অন্য বছরের মতো এবার মানুষ দান-খয়রাত করতে বেশি আসছেন না। কারণ লকডাউন। অনেকে আবার করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সামর্থ্য হারিয়েছেন। এ অবস্থায় ব্যয় কমিয়ে কষ্ট করে এতিম ছাত্রদের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রূপনগর এলাকার অন্য আরেকটি মাদ্রাসার পরিচালক জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত খুব সমস্যা হচ্ছে না। তবে রমজানের বেশি দান-খয়রাত আসায় সামনের জন্য কিছু বাজেট উদ্বৃত্ত থাকে। কিন্তু এবার হয়তো তা আর হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *