ফাইল ছবিহেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওলামা-মাশায়েখরা। দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হেফাজত নেতাদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের নিন্দা ও আলেমদের ওপর হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এ দাবি জানান। এদিন এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় অংশ নেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ওলামা মাশায়েখগণ।
বিবৃতিতে ওলামা মাশায়েখরা বলেন, বিগত ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ পরিস্থিতির পরবর্তী অবস্থা দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট। দেশের আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে যেভাবে মিথ্যাচার ও মানহানিকর অবস্থা করা হচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে আলেম-ওলামা কোন কোন ভিনদেশী নাগরিক। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে কেউই আল্লাহর পাকড়াও থেকে রেহাই পাবে না। নিরীহ মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকদের ওপর অন্যায়ভাবে গুলি চালিয়ে শহীদ করে দেয়া এবং শত শত নিরাপরাধ মানুষকে জীবনের তরে পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে, আবার তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয় আমিরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে নতুন করে মিথ্যা হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, মাওলানা ইলিয়াস হামিদী, মুফতি শরীফ উল্লাহ ও মুফতি বশির উল্লাহসহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ৪জন, ভোলায় ৭জন, সিলেটে ৭জন, গাজীপুরে ৪ জন, নরসিংদীতে ১ জনকে ডিবি অফিসে হয়রানি ও গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।
আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, এহেন পরিস্থিতিতে ওলামা-মাশায়েখসহ দেশবাসী গভীরভাবে উদ্বেগ্ন ও উৎকণ্ঠিত।
আল্লাহপাক কোন জালেমকে ছেড়ে দেন না। আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা পেতে হলে এই ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করুন।
তারা বলেন, বর্তমান সরকার দলীয় প্রশাসন ভিন্ন মতাবলম্বীদের জন্য দেশটাকে একটি কারাগারে পরিণত করেছে। কোনো সম্মানী ব্যক্তিদের ইজ্জতের কোন তোয়াক্কা নেই। দেশের সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। এভাবে একটি সভ্য জাতির মান-সম্মান নিয়ে টিকে থাকতে পারে না। সুতরাং আমরা পরিষ্কার বলে দিতে চাই, এদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক, আদর্শ ও শান্তিপ্রিয় সমাজ বিনির্মাণের চালিকাশক্তি ওলামায়ে কেরামদের উপর জেল জুলুম নির্যাতন বন্ধ করুন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। অন্যায় ভাবে গ্রেফতার ব্যক্তিদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন। শত শত আহত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন। নিহত পরিবারের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করুন। নতুবা এই পবিত্র মাহে রমজানে মজলুমদের আহাজারিতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠবে। আর আল্লাহর গজব থেকে কেউই রেহাই পাবে না।
শীর্ষ আলেমগণ আরও বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও এ মাসে অপরিসীম ফজিলত লাভের আশায় দেশে ও জনগণের কল্যাণ কামনায় মসজিদগুলো তারাবির সহ সব এবাদতের জন্য উন্মুক্ত করে দিন। কোরআনে কারিমের তেলাওয়াতের জন্য মক্তব ও হিফজখানাগুলো খুলে দিন। সারা দেশে করোনা মহামারি থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষার জন্য উপরোল্লিখিত দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে যারা সম্মতি প্রকাশ করেছেন তারা হলেন আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা সালাউদ্দিন নানুপুরী, আল্লামা ইয়াহিয়া হাটহাজারী, আল্লামা হাফেজ তাজুল ইসলাম, আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফিজ্জ্বি, আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, আল্লামা আবুল কালাম, আল্লামা আব্দুল আউয়াল, আল্লামা ওবায়দুল্লাহ ফারুক বারিধারা, আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী, আল্লামা মুফতি মোবারক উল্লাহ, আল্লামা সাজিদুর রহমান, আল্লামা নুরুল ইসলাম খান দরগাহ মাদ্রাসা, আল্লামা মহিউল ইসলাম বোরহান মুহতামিম রেঙ্গা মাদ্রাসা, আল্লামা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, এডভোকেট শাহীনুর পাশা চৌধুরী, খতীবে বাঙ্গাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী,মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী বারিধারা, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস মানিকনগর, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা মুসা বিন আজহার, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মাওলানা ইউনুস রংপুর, মাওলানা ইসমাইল নানুপুরী, মুফতি আব্দুর রহিম, মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ জামী, মুফতি মাসউদুল করিম, মুফতি আজহারুল ইসলাম প্রমুখ।