বাজারে বৈশাখের ইলিশ, আগ্রহ নেই ক্রেতাদের

Slider বাংলার মুখোমুখি


মহামারীতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গত বছরের মতো এবারও স্লান হয়ে গেছে পহেলা বৈশাখের আমেজ। উল্টো এবার বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে কঠোর লকডাউন। ফলে বন্ধ রয়েছে বৈশাখের সব আয়োজন। যার ছোঁয়া লেগেছে বাজারেও। বছরের এই সময়ে বৈশাখ উপলক্ষে যেখানে বাজারে ইলিশ মাছ কেনার হিড়িক পড়ে যায়, সেখানে এবার দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। বৈশাখ উপলক্ষে বাজারে ইলিশ উঠেছে ঠিকই কিন্তু তাতে আগ্রহ নেই ক্রেতার। ফলে বিক্রি না থাকায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।

গতকাল সোমবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে উঠতে শুরু করেছে ইলিশ। তবে এবার বড় আকারের ইলিশ মিলছে কম। এক কেজি ও এর থেকে কিছুটা বেশি ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে বেশি। কিন্তু পরিস্থিতি ও দাম মিলিয়ে ইলিশের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না ক্রেতারা।

যাত্রাবাড়ী বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. হাসান বলেন, লকডাউনের কারণে ইলিশ কম বিক্রি হবে আগে থেকেই ধারণা করেছিলাম। কিন্তু এতটা যে কম বিক্রি হবে তা কল্পনা করিনি। লকডাউনের কারণে এমনিতেই মাছের বাজারে ক্রেতা কম। সেখানে ইলিশের বিক্রি নেই বললেই চলে। হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া ইলিশের দামও জিজ্ঞেস করছেন না কেউ।

যাত্রাবাড়ী মাছের পাইকারি বাজারের সততা মৎস্য ভা-ারের ব্যবসায়ী মো. আলী আজগর বলেন, উৎসবের আয়োজন না থাকলেও ব্যবসায়ীরা ধারণা করেছিলেন, অল্প হলেও ইলিশ বিক্রি হবে। কিন্তু পরিস্থিতি পুরোটাই উল্টো। গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে

ইলিশের আমদানি বেড়েছে, কিন্তু বাজারে বিক্রি অনেক কম।

জানা গেছে, গতকাল যাত্রাবাড়ীর বাজারে মাঝারি আকারের (এক কেজি ওজনের) ইলিশের দাম হাঁকা হয়েছে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। এক কেজির কম ওজনের (৯০০ গ্রাম ওজনের) ইলিশের দাম চাওয়া হয়েছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। ছোট আকারের (৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের) ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়।

একই চিত্র দেখা গেছে কারওয়ানবাজারেও। সেখানকার পাইকারি ব্যবসায়ী মো. হাসেম মিয়া জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ইলিশের আমদানি কিছুটা কম, দামও সমান্য চড়া। পাইকারিতে এক কেজি থেকে ১২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ থেকে ১০০০ টাকায়। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮৮০ থেকে ৯২০ টাকা পর্যন্ত।

তবে এবার ইলিশের দাম তুলনামূলক অনেক কম উল্লেখ করে মাতুয়াইল সাদ্দাম মার্কেট বাজারে মাছ ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর কোল্ড স্টোরেজের ইলিশ বিক্রি করেছি দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। এবার তাজা ইলিশেরই দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এর পরও বিক্রি নেই।

মাছের বাজারে একজন ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আনিস রহমান বলেন, করোনার কারণে খরচ কমিয়ে দিয়েছি। এখন হাজার-দেড় হাজার টাকার ইলিশ মাছ খাওয়ার শখ নেই। বাজারে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের যে দাম তা কিনতেই হিসাব মিলছে না। আরেক ক্রেতা মো. হানিফ সরকার বলেন, করোনায় আয় রোজগার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে সবাই। সেখানে পহেলা বৈশাখে ইলিশ কেনা মানে বিলাসিতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *