ঢাকা: বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কিছু করার নেই। এ ছাড়া সংবিধান অনুযায়ী গণ্ডির বাইরেও যাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
বুধবার দুপুরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক বৈঠকে শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ সব কথা জানান।
চলমান সংকট নিরসনে অভিভাবক হিসেবে ইসি কোনো ভূমিকা নেবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, ইসি মাথাও নয়, অঙ্গ নয়। সংবিধান অনুযায়ী, আমাদের দায়িত্ব, কাজের পরিধি ও গণ্ডি দেওয়া আছে। এর মধ্যেই কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, সংবিধানে যেমন বলা আছে, সে মোতাবেক আমরা জাতীয় নির্বাচন করি। সীমানা নির্ধারণ করি। ভোটার নিবন্ধনও করি। সংবিধানে এ দায়িত্বই দেওয়া আছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও করি আমরা। আর স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচনগুলো আইন অনুযায়ী করি।
রাজনৈতিক সংলাপের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা রাজনৈতিক বিষয়। রাজনীতিবিদরাই এটা করেন এবং করবেন।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রাজনীতিবিদরাই নেবেন। ইসিকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়। যেমন- ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের (ডিসিসি) সীমানা নির্ধারণের গেজেট যদি কাল পাই, তবে একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়েই নির্বাচন করে ফেলবো।
ডিসিসি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা আগে থেকেই জেনে আসছেন যে, এ দুটি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আসছি। সীমানা জটিলতার কারণেই এ নির্বাচনের বিলম্ব হচ্ছে।
আর সীমানা নির্ধারণ করার এখতিয়ার আমাদের নেই। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ কাজ করে। আমরা ভোটার তালিকা করে ফেলেছি। সীমানা নির্ধারণ হলেই নির্দিষ্ট সময় পরেই নির্বাচন করে ফেলবো। সীমানা নির্ধারণের গেজেট এখনো হাতে পাইনি। তাই, এগুতে পারছিনা।
ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার ভাগ করা হবে উল্লেখ করে সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, গেজেট পেলে ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার ভাগ করতে হবে। তাই, গেজেট না পেলে কিছু করা যাবে না। নির্বাচনের জন্য বাজেটে চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে সতর্কও করে রেখেছি, যেন এ অর্থবছরের শেষে হলেও নির্বাচন করতে পারি।
নির্বাচন করার মতো পরিস্থিতি আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমাদের কাজ নির্বাচন করা। আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে। তাই, সব নির্বাচন সময় মতো করার চিন্তাভাবনা করি, যেন আইনের কোনো ব্যত্যয় না হয়, সে চেষ্টাই করবো।
সিইসি এ সময় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় কোনো আক্ষেপ নেই বলেও মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা অনেকগুলো নির্বাচন করেছি। সিটি নির্বাচনগুলোতে সব দল অংশও নিয়েছিল। সেখানে আমরা পারদর্শিতা দেখিয়েছি। জাতীয় নির্বাচনের আগে সবাইকে একমত হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছি। কিন্তু দলগুলো একমত হয়নি।
একতরফা নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, যার যার নিজের অভিমত আছে। কাজেই সবাই সবার মত দিতে পারেন। কণ্ঠরোধ করার কিছু নেই।
স্মার্টকার্ড প্রসঙ্গে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেন, এটা একটা বড় কাজ। আইনবিধি-প্রবিধি করে ফেলেছি। আন্তর্জাতিক কিছু বিষয় ছিল বলে অনেক বিলম্ব হয়েছে। আমরা বিলম্ব করে ফেলেছি। কিন্তু শিগগিরই সে কাজ শুরু হবে।
এনইসি মিলনায়তনে চার নির্বাচন কমিশনার ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্প কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি।