বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার একটি রিসোর্টে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে থাকা নারীর সঠিক পরিচয় পাওয়া গেছে। ওই নারীর নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা (২৭)। তারা আট ভাই-বোন। বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। জান্নাত আরা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কামারগ্রামের পাশের কুলধর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. অলিয়ার রহমান ওরফে পাগলা অলি মিয়ার মেয়ে।
অলিয়ার রহমান গোপালপুর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সেনা সদস্য। মামুনুল হক ওই সময় নারীর নাম আমেনা তৈয়াবা বললেও তার নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। তবে জান্নাত আরা ঝর্ণার আগে বিয়ে হয়েছে, সেই ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে, এ কথা সকলে জানলেও দ্বিতীয় বিয়ের কোনো খবরই জানেন না উপজেলাসহ গ্রামবাসী।
ঝর্ণার বাবা-মা জানান, মেয়ে জান্নাত আরা ঝর্ণার ১১ বছর বয়সে খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা এলাকার হাফেজ শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়। এ দম্পত্তির ঘরে আব্দুর রহমান ও তামীম নামে দুজন পুত্র সন্তান আছে। সন্তান দুটি তার বাবার বাড়ি খুলনায় থাকেন।
জান্নাত আরা ঝর্ণার বাবা অলিয়ার রহমান বলেন, ‘আমার মেয়ের সাথে জামাতা শহিদুল ইসলামের পারিবারিক কলহের কারণে প্রায় তিন বছর আগে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। তারপর থেকে দুই বছর আগে আমরা পাত্র দেখে মেয়েকে বিবাহ করার কথা বললে, মেয়ে বলতো আমার বিয়ে হয়েছে। এ জন্য আমরা আর কোনো পাত্র দেখিনি। তবে কার সঙ্গে ঝর্ণার দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছে সে ব্যাপারে পরিবার জানে না।’
ঝর্ণার মা শিরীনা বেগম বলেন, ‘শুধু একবার ভিডিও কলিং এর মাধ্যমে স্বামী মামুনুল হককে দেখিয়েছিলো কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি তিনি মাওলানা মামুনুল হক ছিলেন।’
ঝর্ণার প্রথম স্বামী হাফেজ শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল্লাহর সাথে জান্নাত আরা ঝর্ণার পরিবারের কোনো যোগাযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ডিভোর্সের পরে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখিনি আমরা। এ কারণে পূর্বের স্বামী হাফেজ শহীদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের কোনো মাধ্যম না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গোপালপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য, ৪নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা বিল্লাল মোল্যা জানান, অলিয়ার রহমান একজন সাবেক সেনা সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। সে একজন ভদ্র মানুষ। বাজারে আসার সুবাদে অনেক কথা হয়। কিন্ত ছেলে-মেয়ের ব্যাপারে বেশি কিছু জানি না।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোনায়েম খান ও ৪নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ আব্দুল মজিদ জানান, জান্নাত আরার বাবা অলিয়ার রহমান একজন সহজ সরল মানুষ। তিনি ৪নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক সেনা সদস্য ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মেয়েটির আগে বিয়ে হয়েছিলো। সে ঘরে দুটি ছেলে সন্তান আছে। পরের বিয়ের বিষয়টি আমরা জানি না।
রবিবার সকালে জান্নাত আরা ঝর্ণার বাবার বাড়ি গোপালপুর ইউনিয়নের কুলধর গ্রাম পরিদর্শনকারী আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, আমি সকালে ওই গ্রামে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। জান্নাত আরার আগের বিয়ের বিষয়টি ও এ উপজেলার বাসিন্দা সেটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেই ঘরে দুটি সন্তান আছে। তারা বাবার কাছে খুলনায় থাকেন।