ঢাকাঃ করোনা সংক্রমণে এখন প্রতিদিনই রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীর ঠাঁই নেই ঠাঁই নেই অবস্থা। একদিনে শনাক্তের হার প্রায় ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ প্রতি ৫ জনে ১ জন করোনা রোগী ধরা পড়ছে দেশে। ১ মাস আগেও এই হার ছিল ৩-এর নিচে। য নতুন করে ৫ হাজার ৩৫৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। দেশে এটাই একদিনে শনাক্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
এরআগে গত সোমবার এই সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ১৮১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরো ৫২ জনের। এই নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃত্যু ৯ হাজার ৪৬ জনে দাঁড়িয়েছে। টানা ৩ দিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজারের উপরে। পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হারও বেড়ে ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়েছে, যা গত ২৪শে আগস্টের পর সর্বোচ্চ। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ সর্বত্র। কি হবে? কী হচ্ছে এমন প্রশ্ন জনমনে। পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরাও।
বাংলাদেশে গত বছর ৮ই মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত সোমবার প্রথমবারের মতো একদিনে ৫ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। আর এরমধ্য দিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২ দিনের মাথায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেল। দৈনিক মৃত্যুর এই সংখ্যা গত ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত বছরের ২৬শে আগস্ট বেশি মৃত্যুর খবর এসেছিল। সেদিন ৫৪ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনার নিয়মিত তথ্যে আরো বলা হয়, নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২১৯ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা ৫ লাখ ৪২ হাজার ৩৯৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৪টি ল্যাবে ২৬ হাজার ৯৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ৫৭৬টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ আর নারী ১৪ জন। ৫১ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরে মধ্যে, ৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৩৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন রংপুর বিভাগের।
নিবন্ধন ৬৮ লাখ, টিকা গ্রহীতা সাড়ে ৫৩ লাখ: সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর ৪৩তম দিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৫০ হাজার ৭৫২ জন। এরমধ্যে ঢাকায় নিয়েছেন ৭ হাজার ১০৮ জন। এ পর্যন্ত দেশে মোট টিকা নিয়েছেন ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ৪৩১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৮ জন এবং নারী ২০ লাখ ৩১ হাজার ১৩৩ জন। টিকা নেয়ার পর সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে মোট ৯৩৩ জনের। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকা নিতে অনলাইনে মোট নিবন্ধন করেছেন ৬৮ লাখ ২ হাজার ৪৪২ জন।