আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে ১ লাখ ৪৮ হাজার প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৮৬ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম প্রকাশ হবে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বুধবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিতব্য এই তালিকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ সংখ্যা জানা যাবে না।
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারে (এমআইএস) যুক্ত হওয়াদের তালিকাই কাল প্রকাশ করবেন মন্ত্রী। যাঁদের নাম শুধু বেসামরিক তালিকায় আছে, তাদের নাম আপাতত প্রকাশ করা হবে না। এ ছাড়া জামুকার সুপারিশবিহীন যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই চলছে, তাদের নামও তালিকায় থাকছে না। বেসামরিক গেজেটে অন্তর্ভুক্ত ৩৯ হাজার ২৪৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, এর মধ্যে ১ হাজার ৬৩১ জন বিভিন্ন বাহিনীর।
মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের ৪৯১টি উপজেলা ও মহানগর কমিটির মধ্যে ৩৭৯টি কমিটির বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। সময় বেঁধে দেয়া হলেও সব প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। এ জন্য এসব তালিকা প্রকাশ আপাতত বাকি থাকছে।
স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে বারবারই। টানা প্রায় ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে পারেনি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষকেরা বলছেন, প্রকৃত ও নির্ভুল তালিকা করতে না পারাটা শুধু ব্যর্থতাই নয়, অদক্ষতাও বটে।
২০১৭ সালে ঢাকঢোল পিটিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হলে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ আবেদন আসে। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় শেষ পর্যন্ত নতুন তালিকা প্রকাশ স্থগিত করতে হয় সরকারকে। এখনো ওই যাচাই–বাছাই চলছে।
সরকারি তালিকাভুক্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসে ১২ হাজার টাকা ভাতা পান। ঈদ বোনাসসহ বছরে সব মিলিয়ে একজন ভাতা পান ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বছরের পর বছর ধরে জেলা প্রশাসনের তালিকার ভিত্তিতেই ১ লাখ ৯২ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ভাতা পাঠানো হতো। কিন্তু এমআইএস সফটওয়্যারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার পর সংখ্যাটি ২১ হাজার কমে গেছে। গত অক্টোবর ও নভেম্বরে ১ লাখ ৭১ হাজার জনকে ভাতা পাঠানো হয়েছে।