টপ অর্ডারের ব্যর্থতা ও নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে ডানেডিনের প্রথম ওয়ানডেতে ১৩১ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মুশফিকুর রহীম ২৩, লিটন দাস ১৯, তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ রান। বাংলাদেশের ইনিংসে ধস নামান ট্রেন্ট বোল্ট। মাত্র ২৭ রানে ৪ উইকেট নেন এই পেসার। জেমি নিসাম ও সান্টার নেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো নিজের জন্মদিনে খেলতে নামেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কিন্তু জন্মদিনটি রাঙিয়ে রাখতে পারলেন না তিনি। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে আউট হয়েছেন মাত্র ১৩ রানে।
অথচ বাংলাদেশের ইনিংসের প্রথম স্কোরিং শটই ছিল ছয়। ট্রেন্ট বোল্টের করা প্রথম ওভারের তৃতীয় বলটি ছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে শর্ট লেন্থের। জায়গা পেয়ে আপার কাটে থার্ড ম্যান দিয়ে ছক্কা হাঁকান তামিম। ম্যাট হেনরির করা পরের ওভারে দারুণ এক ফ্লিকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইতিবাচক শুরুর ইঙ্গিতই দেন টাইগার অধিনায়ক। কিন্তু সেটি আর বেশিক্ষণ টেনে নিতে পারেননি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরের পথ ধরেন বার্থডে বয়। এক চার ও এক ছয়ের মারে ১৫ বলে ১৩ রান করে ফেরেন তিনি।
তামিম নিজের খেলা তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকালেও, তিন নম্বরে নামা সৌম্য মুখোমুখি তৃতীয় বলে ধরেছেন প্যাভিলিয়নের পথ। বোল্টের একই ওভারের চতুর্থ বলেই বিদায়নেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশের বিপদ আরও বাড়তে পারত হেনরির করা ষষ্ঠ ওভারেই। প্রথম বলেই আউটসাইড এজ হয়েছিল লিটন দাসের, বল চলে যায় প্রথম স্লিপে। সেটি ঝাঁপিয়ে পড়ে ধরার চেষ্টা করেন উইকেটরক্ষক টম লাথাম। কিন্তু রাখতে পারেননি নিজের গ্লাভসে, ফলে জীবন পেয়ে যান লিটন।
প্রথম পাওয়ার প্লের দশ ওভারে ২ উইকেটের বিনিময়ে ৩৩ রান করে বাংলাদেশ। এরপর কাইল জেমিসন আক্রমণে আসতেই প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তাকিয়ে স্বাগত জানান লিটন। যা তার ইনিংসের একমাত্র চার। ইনিংসের ১৪তম ওভারে প্রথমবার বল হাতে নেন নিশাম, সাজঘরে পাঠিয়ে দেন লিটনকে। আউট হওয়ার আগে লিটন করেন ৩৬ বলে ১৯ রান।
দলীয় পঞ্চাশের আগেই তিন উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবুও আশার আলো ছিলেন দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম। কিন্তু তাকে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে দিলেন না নিউজিল্যান্ডের পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিমি নিশাম।
টাইগারদের বিপদ বাড়িয়ে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরের পথ ধরেন মুশফিক। ইনিংসের ২২তম ওভারের প্রথম বলে নিশামের শরীর বরাবর করা এক্সট্রা বাউন্সের ডেলিভারিতে কাট করতে হয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়েন মুশফিক। আউট হওয়ার আগে ৪৯ বল খেলে ২৩ রান করেন তিনি।
মুশফিক ফিরে যাওয়ার পর দূর্ভাগ্যের শিকার হন আরেক মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন। যার ফলে মাত্র ৭২ রানেই ৫ উইকেট হারিয় বাংলাদেশ।
এরপর একপ্রান্তে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ লড়াই চালিয়ে গেলেও অপরপ্রান্ত থেকে নিয়মিত বিরতীতে উইকেট হারাতে থাকে সফরকারীরা। মেহেদি হাসান মিরাজ ১ রান করে ফিরে গেলে উইকেটে আসেন অভিষিক্ত শেখ মেহেদি হাসান। নিজের দ্বিতীয় বলে কভার দিয়ে বিশাল ছক্কার মারেন ওয়ানডে ক্রিকেটে রানের খাতা খোলেন মেহেদি। তবে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
শেখ মেহেদির বিদায়ে দলীয় একশ রানের আগেই ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর তাসকিন আহমেদের সঙ্গে ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৭ রানের জুটি গড়েন মাহমুদুল্লাহ। দলীয় ১২৫ রানের মাথায় ফেরেন ৫৪ বলে ২৭ রান করা এই ব্যাটসম্যান। এরপর আর ৬ রান যোগ কওে ১৩১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস।