নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এসময় দলের দুজন নেতার উল্লেখ করে বলেন, এ তদন্তের দায়িত্ব দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীকে দেয়া হোক। এসময় তিনি জেলা কমিটির নেতাদের দিয়ে ঘটনার তদন্ত করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের তদন্তের দায়িত্ব না দেয়ার দাবি জানিয়ে কাদের মির্জা বলেছেন, ‘জেলা কমিটিকে তদন্তের দায়িত্ব দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এখান থেকে তদন্ত দিলে একরাম চৌধুরী, নিজাম হাজারীরা প্রভাবিত করবে। বড়ভাই সেতুমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরের কাছে আবেদন, আপনি আমাদের এই ডিভিশনের দুইজন নেতা আছে একজন হচ্ছে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাহেব, আরেকজন আমাদের চাঁদপুরের সুজিত রায় নন্দী। এই দুইজনকে দল থেকে তদন্ত দেন।
না হয় ডিজিএফআই আছে, এনএসআই আছে, তারা তদন্ত করুক। ঢাকা থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করুক। তারা তদন্ত করে যে সিদ্ধান্ত নেবে, যে শাস্তি দেবে আমি তা মাথা পেতে নেবো। এমন কি ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো কর্মী জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নিক। তিনি বলেন, কিন্তু আজকে মুজাক্কির ও আলাউদ্দিনের হত্যাকা-কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র চলছে। এখানে জজ মিয়াদের ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র চলছে। এটা কিন্তু কোম্পানীগঞ্জের মানুষ মেনে নেবে না। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘অকারণে এখানে কাউকে গ্রেপ্তার করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হোক, এটা আমি চাই না। বাদলকে গ্রেপ্তার করেছে, এটার জন্য আমি খুশি নই। রাজনীতি করলে মামলা, গ্রেপ্তার এগুলা রাজনীতিবিদদের জন্য এমন কঠিন বিষয় না। এটা জাতীয়ভাবে হস্তক্ষেপ করতে হবে। হস্তক্ষেপ করে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। অতীতের জন্য ক্ষমা চেয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি সাহস করে সত্য কথা বলব। আমি বিষয়টা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিব্রত করতে চাই না। ওনার সাথে আমার দুইবার কথা হয়েছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। আমি এখন পর্যন্ত ওনার সাথে দেখা করি নাই। আমি চাই এখানে সবাই মিলে দল করুক সুসংগঠিতভাবে।’ তিনি বলেন, ‘যাদের এখানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করার অবস্থা নাই, দলে কোনো ত্যাগ নাইÑ এ ধরনের ব্যক্তিরা, স্বার্থান্বেষী মহল যারা নোয়াখালীর টেন্ডারবাজির সাথে জড়িত, তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফেনী, নোয়াখালী, সোনাগাজী, সুবর্ণচর, কবিরাহট ও চরাঞ্চল থেকে অস্ত্র এনে আমার পৌরসভায় হামলা করেছে। এ সময় জানালা দিয়ে আমাকে গুলি করা হলো। গুলিটা লেগেছে আমার সাথে থাকে একটা ছেলে, তার পেটে লেগেছে। সে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছে।’ গোলাগুলিতে নিহত আলাউদ্দিনের প্রসঙ্গে কাদের মির্জা বলেন, ‘এখানে একটা সিএনজিচালক সে কোত্থেকে এসেছে জানি না। আমাদের সকল নেতা–কর্মী নিরস্ত্র। আমার কোন নেতাকর্মীকে কোনো অস্ত্র দিইনি। আমার এখানে কোনো অস্ত্র ছিল না। পুলিশ এসেছে আমাকে রক্ষা করার জন্য। সেখানে পুলিশ এবং তারা (মিজানুরের অনুসারীরা) সংঘর্ষ করে। এই ছেলে (আলাউদ্দিন) মিজানুর রহমান বাদলের লোক যদি হয়ে থাকে, সে আমার পৌরসভার এখানে কেন আসবে? এটা হলো আমার প্রশ্ন। হয়তো সে পথচারী, তাকে হত্যা করে পরিস্থিতিটাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য এটা একটা ষড়যন্ত্র।’