৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হলে, ২৬ মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস : মোশাররফ

রাজনীতি


আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আপনারা যে বলেন ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হয়ে গেছে, তাহলে ২৬ ও ২৭ মার্চ কি হয়েছে? তার থেকেও বড় প্রশ্ন যদি ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হবে, তাহলে আমরা ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করি কেনো?

তিনি বলেন, এই স্বাধীনতা দিবস তো জিয়াউর রহমান ঠিক করেন নি, ঠিক করেছেন ১০ এপ্রিল দেশে যে অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। সেই অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। তিনি ১১ এপ্রিল একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন সেখানে তিনি জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন ২৬ মার্চ একটি এলাকা দখল করে সেই এলাকা থেকে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ ঘোষণা করছি, সেজন্য ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস।

মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লা‌ব মিলনায়ত‌নে এক আলোচনা সভায় তি‌নি এ সব কথা বলেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান, মেজর রফিক ও ওলি আহমদ তারা পটিয়ার একটি পাহাড়ে প্রথম ক্যাম্প স্থাপন করেন। সেখান থেকে তারা এসে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এখন একজন প্রধানমন্ত্রী বললেন ২৫ ও ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান বাঙ্গালীদের হত্যা করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ২৬ মার্চ সকালে জিয়াউর রহমান পটিয়ার একটি পাহাড়ের তাদের ক্যাম্প স্থাপন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করার জন্য, তারপরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে ২৬ মার্চের শেষ প্রহরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র এসে তিনি নিজের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আর ২৭ মার্চ তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, এটাতো ইতিহাস। তাহলে আজকে যে প্রধানমন্ত্রী বললেন ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান বাঙ্গালীদেরকে হত্যা করেছে এবং ২৭ মার্চ জিয়াউর রহমান বাঙ্গালীদেরকে হত্য করার সময় তাকে ধরে নিয়ে কালুরঘাট বন্দী করে রাখা হয়। তিনি যখন ক্যাম্প স্থাপন করে ২৬ মার্চের শেষ প্রহরে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র নিজের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন দিলেন, আর ২৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা দিলেন। তিনি যদি জনগণের কাছে বন্দী থাকতেন তাহলে এ কাজগুলো কি ভাবে করলেন? দুঃখ জনক স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে আমাদের এই ধরনের ইতিহাস শুনতে হচ্ছে।

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আজকে ইতিহাস নিয়ে যতই ঘোর প্যাচ করবেন, সত্য সত্যই আর বানোয়াট বানোয়াটই। সত্য কোনদিন পরাজিত হয় না, বানোয়াট মিথ্যা কিছুদিন হয়তো সত্যকে নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু সত্য অবশেষে প্রকাশ পাবেই। পৃথিবীতে বিভিন্ন ইতিহাসে মিথ্যা কোন দিন টিকে থাকে নাই, পরিশেষে জয় হয়েছে। অন্যায় টিকে থাকতে পরেনি, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই আজকে সকল অন্যায়, সকল অসত্যের বিরুদ্ধে একটাই আমাদের লক্ষ এটা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে এদেশের মানুষকে মুক্ত করতে হলে এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদ সরকার যারা ইতিহাস নিজেরা লিখেন তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *