ডেস্কঃ আফগানিস্তানে একই টেলিভিশন স্টেশনে কর্মরত তিন নারী সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। চতুর্থ আরেকজন নারী সাংবাদিক মারাত্মক আহত হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুটি আলাদা, তবে সুসংগঠিত আক্রমণ চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনা ঘটেছে জালালাবাদ শহরে। পুলিশ বলেছে, এ ঘটনায় জড়িত মূল অস্ত্রধারী একজনকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। তালেবানের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা আছে।
তবে তালেবানরা এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে আরো বলা হয়েছে, দেশটিতে সাংবাদিক, অধিকারকর্মী ও অন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের টার্গেট করার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে অনেক মানুষকে। সর্বশেষ যে তিন নারী সাংবাদিককে হত্যা করা হলো তারা সম্প্রতি হাইস্কুলের পড়া শেষ করেছেন। এরপরই যোগ দিয়েছিলেন ইনিকাস টিভি স্টেশনের ডাবিং ডিপার্টমেন্টে। এই টিভি স্টেশনের প্রধান জালমাই লতিফি এ কথা বলেছেন। বার্তা সংস্থা এপির মতে, নিহতদের মধ্যে মুরসাল ওয়াহিদি হেঁটে বাড়ি যাওয়ার সময় তার ওপর অস্ত্রধারীরা হামলা চালায়। অন্য নিহত দু’জনকে শুধু শাহনাজ এবং সাদিয়া নামে শনাক্ত করা গেছে। তারা বাড়ি ফেরার পথে আলাদা হামলায় নিহত হয়েছেন। জালমাই লতিফি বলেছেন, গুলিতে তারা পায়ে হেঁটে অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার সময় এই হামলা হয়েছে। আহত চতুর্থ সাংবাদিককে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওদিকে নাঙ্গারহার পুলিশ প্রধান জুমা গুল হেমাত বলেছেন, পুলিশ অন্য হামলাকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তারা মূল সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি আরো বলেছেন, পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল মূল হামলাকারী। এ সময় তাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে সে। তালেবানের একজন সদস্য সে।
এখানে উল্লেখ্য, এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন তালেবানের সঙ্গে। তারপর থেকে দেশটিতে এমন টার্গেট করে হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির ইনিকাস টিভি স্টেশনে মোট ১০ জন নারী সাংবাদিক কর্মরত। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট চারজনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন উপস্থাপিকা ছিলেন। তার নাম মালালাই মাইওয়ান্ড। তাকে ডিসেম্বরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত মাসে রাজধানী কাবুলে সুপ্রিম কোর্টের দু’জন নারী বিচারপতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে বিবিসির কাছে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি বলেছিলেন, তালেবানের উত্থান নিয়ে তিনি আতঙ্কিত নন। তার ভাষায়, তার সরকার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে না। ফেব্রুয়ারিতে ন্যাটো বলেছে, তারা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি যে, মে নাগাদ তাদের সেনা প্রত্যাহার করা হবে কিনা। তবে এই সময়ের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারে তারা সম্মত হয়েছিল তালেবানদের সঙ্গে চুক্তিতে। এখনও আফগানিস্তানে অবস্থান করছে প্রায় ৯ হাজার ন্যাটো সেনা। এর মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা। তাদেরকে আফগানিস্তানে রাখা না রাখা নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে চুক্তি করেছিলেন, তা নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বহাল রাখবেন কিনা সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।