৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১। করোনাবিরোধী লড়াইয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। শুরু হয় গণটিকাদান কর্মসূচি। এরপর এখন পর্যন্ত টিকা দেয়া হয়েছে ২৬ লাখের বেশি মানুষকে। স্বল্পসংখ্যক মানুষের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবরও পাওয়া গেছে। কিন্তু টিকা নেয়ার পর কারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি এতোদিন। প্রথমবারের মতো এই ধরনের একটি ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। শীর্ষ স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তার ক্ষেত্রে ঘটেছে এই ঘটনা।
টিকা নেয়ার ১২ দিন পর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন মত।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. সেলিম হোসেন মানবজমিনকে জানান, সচিব স্যার অসুস্থবোধ করলে ১৮ই ফেব্রুয়ারি করোনার পরীক্ষার নমুনা দেন। এরপর ১৯শে ফেব্রুয়ারি করোনা পজেটিভ হওয়ার খবর আসে। ৭ই ফেব্রুয়ারি রাজধানীর জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টিকা নিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তার সামান্য কাশি আছে। জ্বর নেই। শরীরটা একটু দুর্বল।
টিকা নেয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে- দেশের বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ভাইরাসটির শক্তিকালীন সময় ১৫ দিন। এর আগেই তিনি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন। তিনি হয়তো টের পাননি। তার লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। কিন্তু তিনি সংক্রমিত হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি এ রকম যে আমরা টিকা দিলে করোনার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। টিকার একটি কার্যকর সময় আছে। ৭ দিন পর অ্যান্টিবডি তৈরি শুরু হয়। তারমানে এমন নয় যে করোনা হবে না। ধীরে ধীরে অ্যান্টিবডি বৃদ্ধি পাবে। সুরক্ষা দেবে। তিনি বলেন, করোনার টিকার প্রথম ডোজ দেয়ার ৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ। তখন দেখা যাবে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে তার এ সংক্রমণটা হবে না। তিনি তো এখনো দ্বিতীয় ডোজ নেননি। তার সুরক্ষা হয়নি। এই জনস্বাস্থ্যবিদ আরো বলেন, ভাইরাসটির একটি শক্তিকালীন সময় থাকে ১৪ দিন।