জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের ষড়যন্ত্র করে `সরকার আগুন নিয়ে খেলছে’ বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রোববার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই হুশিয়ারি দেন।
খন্দকার মোশারফ বলেন, `জিয়াউর রহমানকে ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কোনোক্রমে লেখা সম্ভব হবে না। আজকে যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছেন। ইতিহাস যারা লেখেবেন সত্যকে মেনে নিয়ে লেখবেন। এদেশে ২৫ মার্চের আগে স্বাধিকারের আন্দোলন হয়েছে, স্বায়েত্বশাসনের আন্দোলন হয়েছে, পাকিস্তানের ক্ষমতায় যাওয়ার আন্দালন হয়েছে কিন্তু জিয়াউর রহমানই সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছেন। তাকে নিয়ে টানাটানি করে আগুন নিয়ে খেলছেন। আপনাদের হাত পুড়ে যাবে, ছাঁই হয়ে যাবে। এই খেতাব কেউ দেয় নাই, এই খেতাব শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানসহ যারা খেতাব পেয়েছেন তারা অর্জন করেছেন। এই খেতাবের ওপরে হাত দেয়ার কোনো অধিকার কারো নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এই সরকার তো সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে এদেশের জনগণের ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে আছে। তাদের পক্ষে নৈতিক কথা বলা সম্ভব নয়। মিথ্যা ওপরে প্রতিষ্ঠিত, মিথ্যা তাদেরকে বলতে হবে, তারা অন্যায়ের ওপরে প্রতিষ্ঠিত তাদের অন্যায়ই করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আজকে দেখে বাংলাদেশে সুশাসনের অভাব, বিচারহীনতা, আজকে গণতন্ত্র নাই, অর্থনীতিতে লুটপাট, ব্যাংকগুলো লুটপাট হচ্ছে, রিজার্ভ ডাকাতি হচ্ছে, শেয়ারবাজার লুট হচ্ছে। একটি জায়গা আপনি দেখাতে পারবেন না যেখানে তারা কোনো ভালো কাজ করেছে এবং ন্যায়ের কাজ করেছে, কোনো সত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। তাদের এই দুর্গন্ধ বাংলাদেশে শুধু নয়, বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আল-জাজিরা তারা একটা রিপোর্ট দিয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে নাকচ করে দিলেন। যদি ওই রিপোর্টের বিষয়বস্তুগুলো যদি মিথ্যা হয় তাহলে সরকারের দায়িত্ব ছিলো এই সম্বন্ধে প্রতিবাদ করা। কিন্তু তারা বিষয়বস্তুর মধ্যে যান নাই শুধু রাজনৈতিকভাবে নাকচ করে দিয়েছেন।’
বিএনপির নীতি নির্ধারক বলেন, ‘এটাই কী শেষ। দি ইকোনোমিস্ট আরো এক ধাপ সামনে গিয়ে যে লেখা লিখেছে কই এখন পর্যন্ত সরকার থেকে প্রতিবাদ করার সাহস পায় নাই। ডয়েচে ভেলে এই সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী সাক্ষাতকারে একটি প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন নাই। কারণ তার কাছে জবাব নাই। অতত্রব এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই।’
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের যৌথ উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জেড ফোর্সের অধিনায়ক সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম পদক বাতিলের প্রতিবাদে এই আলোচনা সভা হয়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকা সভায় জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আালাল, শিরিন সুলতানা, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, গণফোরামের মোশতাক আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের মকসুদ আলী মঙ্গোলিয়া, আবদুল খালেক, ফরিদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের কালাম ফয়েজী, রায়হান আল মাহমুদ, মাজহারুল ইসলাম, সালেহা আখতার প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।