চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে, সিদ্ধান্তের অপেক্ষা

Slider শিক্ষা


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নানা প্রস্তুতি চলছে। বিদ্যালয়গুলোতে চলছে জীবাণুনাশকের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে পরীক্ষা। হলগুলোও ধীরে ধীরে খুলতে যাচ্ছে। দিন তারিখ ঠিক না হলেও শিগগিরই আসছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা। এর অংশ হিসেবেই শিক্ষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলা হয়েছে সরকার থেকে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন মঙ্গলবার টিকা গ্রহণের দিন বলেন, প্রাথমিকের সব শিক্ষককে সপ্তাহখানেকের মধ্যে টিকা দেয়া হবে। আর বুধবার একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, সকল শিক্ষককে অগ্রাধিকারভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরকার শিশুদের বিদ্যালয়ে ফেরাতে যথেষ্ট আন্তরিক।
তবে সকল ঝুঁকি বিবেচনা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেই শিক্ষার্থীদের ফেরানো হবে। কোভিড পরিস্থিতি আমাদের সামনে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্মুল্যায়ন ও সংস্কারের একটি সুযোগও তৈরি করেছে।

প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, সামনের যে কোনো সময় খুলে দেয়া হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর প্রস্তুতি হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে করোনা ভাইরাসের টিকা। তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে এই টিকা দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন করে বলেছেন তোমার সব শিক্ষককে টিকা দিয়ে নাও, যেহেতু আমরা যেকোনো সময় স্কুল খুলে দেবো। যাতে আমার কোনো শিক্ষক টিকার আওতার বাইরে না থাকেন। শিক্ষকদের টিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কেও নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, আমাদের শিক্ষকরা খুব আনন্দ উৎসাহ নিয়ে টিকা গ্রহণ ও রেজিস্ট্রেশন করছেন। অনেক শিক্ষকই উচ্ছ্বাসের কথা ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়েছেন। আমরা তাদের রেজিস্ট্রেশন ও টিকাগ্রহণের তথ্য সংগ্রহ করছি। এরপর টিকা গ্রহণ শেষ হলে এই তথ্য প্রেরণ করা হবে। এরপর বিদ্যালয় খুলে দেয়ার কথা বলা হলে আমরা খুলে দেবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আর বাড়বে কিনা এবিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে। করোনা পরিস্থিতি এখন ধীরে ধীরে ভালোর দিকে যাচ্ছে। টিকাদান শুরু হয়েছে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন খুলে দেয়া যায়। তবে প্রধানমন্ত্রী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যবেক্ষণ করার কথা বলেছেন। সেটি আমরা দেখতে চাই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের আছে। সরকারের সর্বোচ্চ মহলের সম্মতি পেলেই আমরা খুলে দেবো। আর দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে খোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশনাও দেয়া হয় মাউশি থেকে। এছাড়াও নির্দেশনা দেয়া হয় প্রাথমিক থেকে শুরু করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও। ঘোষণা করা হয়েছে রোডম্যাপ। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবেন সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয়দিন। আর অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যাবেন সপ্তাহে একদিন করে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরলেও চালু থাকবে অনলাইন ক্লাস।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা থেকে যেন শিক্ষার্থীরা বিমুখ না হয় সেসব দিক খেয়াল রাখা হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খোলার ওপর নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাও। এবার প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে সাধারণ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলররা ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরেই এই পরীক্ষা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *