আগামী মে মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশজুড়ে বড় পরিসরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট শুরু হবে। ভোটার তালিকার সিডি তৈরী নিয়ে আগামী মার্চে কমিশন ব্যস্ত থাকবে। ফলে মার্চে কোনো নির্বাচন হবে না বলে জানেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, আগামী ৭ এপ্রিল প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
আগারগাওস্থ নিবাচন ভবণের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ ও নতুন সদস্যদের বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। এ সময় অন্যান্য কমিশনারগণ ও ইসি সচিবও বক্তব্য রাখেন।
সিইসি নূরুল হুদা বলেন, এপ্রিলের ৭ তারিখে পৌরসভা নির্বাচনের সাথে কিছু ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হবে। এ জন্য ১৭ ফেব্রুয়ারি কমিশন সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হবে, কয়টি পৌরসভা ও ইউপিতে ভোট করা যায় তা পর্যালোচনা করা হবে। তবে রমজানে নির্বাচন হবে না। মার্চ মাসে কোনো নির্বাচন হবে না। একমাস আমাদের ছুটিতে যেতে হবে। কারণ আমাদের ভোটার লিস্ট তৈরি করা, সেটা চূড়ান্ত করা, তালিকার সিডি করে প্রার্থীদের দিতে হবে। এ সকল কাজে সময়টা চলে যাবে। তিনি বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন সিডি ছিলো না, ফলে ভূয়া ভোট হয়ে যেতো।
সামনের নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু ও সংঘাতমুক্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিইসি হুদা। তিনি বলেন, কোথাও কোথাও ভোটে সংঘাত হয়। এগুলো চলে গেলে খুশি হবো, কিন্তু যাচ্ছে না। আজকেও আমরা চট্টগ্রাম, যশোরে কথা বলেছি। ১৪ তারিখ ভালোবাসা দিবসের নির্বাচনকেও ভালোবেসে ফেললাম। আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনার দিক দিয়ে যা যা দরকার আমরা সব ঠিকভাবে দেখেছি।
বিগত নির্বাচনগুলোতে রক্তপাত, সহিংসতা কেন ঠিক করা গেলো না। আগামিতে কিভাবে সামাল দেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এতো রক্তপাত হয়েছে, এতো সংঘাত হয়েছে তা না। যেগুলো হয়েছে আমাদের কাম্য নয়। এগুলোতো প্রার্থী, প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। আমাদের তো পুলিশ থাকে, কিন্তু একটা ঘটনা ঘটে গেলে তো কিছু করার থাকে না। প্রচুর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকে, ম্যাজিস্ট্রেট থাকে। তারপরও এগুলো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়। প্রার্থী ও প্রার্থীদের সমর্থকদের সহনশীল থাকতে হবে। আর আমাদের প্রচেষ্টা তো আছেই। তবে এটাকে ঢালাওভাবে বলবেন না, ব্যাপকভাবে হয়েছে তা নয়।
তিনি বলেন, সারা নির্বাচনের মধ্যে তিন-চারটি জায়গায় এমন হয়েছে। আমরা সেটাকে সামাল দিয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে যেখানে অসুবিধা হয়েছে সেখানে পুলিশি মোকাদ্দমা করেছে। আমাদের প্রত্যাশা ও প্রস্তুতি থাকবে এগুলো যাতে না হয়। এগুলো তো অ্যাকসিডেন্ট বা ইনসিডেন্ট, ‘ইউ ক্যাননট কন্ট্রোল ইট ফুললি’ এদেশে। আমাদের প্রস্তুতিতে কোন ঘাটতি থাকলে বলবেন।
আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর জন্য কোন বার্তা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কেএমন নূরুল হুদা বলেন, আমরা তাদের অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রাখি। প্রত্যেকটি জায়গায় র্যাবের সদস্য, বিজিবি, আনসার আছে। প্রত্যেকটা কেন্দ্রে ১২ থেকে ১৮ জন আর্মড পুলিশ এবং আনসার নিয়োজিত থাকবে। তাদের সাথে নির্বাচন কমিশনাররা কথা বলেছেন। তারা আরো সুষ্ঠুভাবে তদারকি করবে। আগামি ১৪ তারিখ যে নির্বাচন আছে সেগুলো তারা মনিটর করবে। কোন জায়গায় খারাপ খবর পেলে কমিশনাররা কথা বলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।