কালকিনিতে মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ এসপি আমাকে ধরে ঢাকায় নিয়ে যান

Slider সারাদেশ


রাজৈর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি: নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ থেকে তুলে নিয়ে কালকিনি পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন মাদারীপুরের এসপি মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। ১৩ ঘণ্টা পর নিজ বাড়িতে ফিরে এমন দাবি করেছেন তিনি। সবুজ বলেন, আমাকে বিকালে হঠাৎ এসপি ফোন করে দেখা করতে বলেন। তিনি থানার ওসিকে আমার কাছে পাঠান। তখন ওসি’র কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলার বিষয় নিয়ে এসপি আমার সঙ্গে কথা বলবেন। পরে আমি সরল মনে তার গাড়িতে ওঠে এসপি অফিসে যাই। সেখানে যাওয়ার পর এসপি আমাকে তার গাড়িতে উঠিয়ে ঢাকায় নিয়ে যান।
নারকেল গাছ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা আরো বলেন, এসপি তাকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে নিয়ে যান।

তিনি নির্বাচন থেকে সরিয়ে দাঁড়িয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম হানিফের পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানান। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদের তার সঙ্গে এসব কথা বলেন বলে সবুজ জানান।
তবে বাড়ি ফিরে মশিউর রহমান সবুজ গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। এক সময় কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। দলের কাছে মনোনয়নও চাননি তিনি। জনগণের হয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। তাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে তিনি কালকিনির নিজ বাড়িতে ফেরেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজন ও সমর্থকরা।
স্বজন ও সমর্থকরা জানান, শনিবার দুপুর ২টার দিকে কালকিনি পৌর এলাকার পালপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ। এ সময় তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল করেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। তাৎক্ষণিক সেখানে কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ নাছিরউদ্দিন গাড়ি নিয়ে হাজির হন। পরে সেখান থেকে সবুজকে পুলিশের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন সবুজ। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কালকিনি থানা ঘেরাও করে সবুজের সমর্থকরা। রাস্তার মোড়ে মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় কালকিনি-ভুরঘাটা ও কালকিনি-মাদারীপুর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা চালায় নৌকার সমর্থকরা। এ সময় দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয় অন্তত অর্ধশত মানুষ। ভাঙচুর করা হয় বেশকিছু দোকানপাট। আড়াই ঘণ্টা চলা সংঘর্ষে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবদুল হান্নান জানান, মেয়র প্রার্থী সবুজ নিজ বাড়িতে আছেন। তার কোনো ক্ষতি হয়নি। তাকে তুলে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *