ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খাঁন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশে ইসলামের প্রকৃত পরিচর্যাকারী । তারই যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামের যথাযথ উন্নয়ন করে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কর্মকান্ডকে যথাযোগ্য মর্যাদায় আসীন করেছেন। দেশের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গিপনা নির্মূলের সাফল্যও তাঁর সরকারের বড় অবদান বলেন তিনি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আজ চট্টগ্রাম জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদে বাংলাদেশ ইসলামী ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম এবং সাম্প্রদায়িক স¤প্রতি রক্ষায় তার অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বিএম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল হামিদ জমাদ্দার, ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ফারুক আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন উদার চেতনার অধিকারী একজন খাঁটি ঈমানদার মুসলমান। তিনি কখনও ইসলামকে রাজনৈতিক উদেশ্যে ব্যবহার করেননি। বাংলাদেশকে সকল ধর্মের সকল মানুষের জন্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট।
ফরিদুল হক খাঁন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বল্পকালীন শাসনামলে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণার্থে গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং ভৌত অবকাঠামোগত পদক্ষেপ যেমন ছিল, তেমনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের বিষয়াদি বিবেচনায় রেখে তিনি ইসলামের প্রচার ও প্রসারে গ্রহণ করেছিলেন বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকরী নানা পদক্ষেপ। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, তেমনি বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামের প্রচার-প্রসারের স্থপতিও তিনি।
তিনি বলেন, ইসলামের প্রচার-প্রসারে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের অবদান অনেক। এ সরকার মসজিদ মন্দিরের যে উন্নয়ন করেছেন তা কল্পনাতীত। ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ প্রকল্প দ্বিতীয় বৃহৎ।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন এখন সরকারি অর্থে পরিচালিত অন্যতম একটি বৃহৎ সংস্থা হিসেবে বিশ্বনন্দিত। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ যাবৎ পবিত্র কুরআনের বাংলা তরজমা, তাফসির, হাদিস গ্রন্থের অনুবাদ, রাসূল (সা.) এর জীবন ও কর্মের ওপর রচিত ও অনূদিত গ্রন্থ, ইসলামের ইতিহাস, ইসলামি আইন ও দর্শন, ইসলামি অর্থনীতি, সমাজনীতি, সাহাবী ও মনীষীগণের জীবনী ইত্যাদি নানা বিষয়ে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান ঢাকাস্থ প্রধান কার্যালয়সহ সারাদেশে ৬৪টি জেলা কার্যালয়, আর্তমানবতার সেবায় ২৮টি ইসলামিক মিশন, ৭টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির মাধ্যমে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, পাকিস্তান আমলে হজযাত্রীদের জন্য কোনো সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা ছিলনা। বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে প্রথম হজ¦যাত্রীদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করেন এবং হজ্ব ভ্রমণ কর রহিত করেন। ফলে হজ্ব পালনকারীদের আর্থিক সাশ্রয় হয়।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা কথায় কথায় নিজেদের ইসলামের সেবক দাবি করলেও তাদের আমলে সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল বলেন তিনি।
সূত্র : বাসস