ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল): সকাল ৮ থেকেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছিল টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। ভোটারদের দীর্ঘ লাইনও ছিল সেখানে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছিলেন ভোটাররা। বেলা পৌনে ১২টায় হঠাৎ করেই পাল্টে যায় দৃশ্য। নিজের অবস্থা শোচনীয় দেখে জাল ভোট দিতে যান কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের লোকজন। বাধা দেন অপর কাউন্সিলর প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের সমর্থকরা। আর তাতেই বাধে বিপত্তি। শুরু হয় সংঘর্ষ। লাঠি হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সদ্য বিজয়ী কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন।
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। কেটে ফেলা হয় সূচি নামের এক নারীর আঙুল। গুরুতর আহত হয় ৭ জন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আনোয়ারের সমর্থক আহত খায়রুল মারা গেছে এমন গুজব রটিয়ে বাকি সময় কেন্দ্র নিজেদের দখলে রাখেন তিনি। তৃতীয় ধাপে পৌর নির্বাচনে গত শনিবার এসব ঘটনার সাক্ষী হলেন ভূঞাপুরবাসী। এদিকে ফলাফল ঘোষণা শেষে বিজয়ী হওয়ার পর আরেক খেলায় মেতে ওঠেন আনোয়ার হোসেন। তিনিসহ হিংস্র হয়ে ওঠেন তার সমর্থকরা। শুরু হয় প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা। দফায় দফায় চালানো হয় হামলা। ভাঙচুর ও কোপানো হয় কমপক্ষে ১৫টি বাড়ি। আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
সরজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ ঘরেই ঝুলছে তালা। কিছু কিছু বাড়িতে নারী ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ছাড়া তেমন কোনো লোক চোখে পড়েনি। সদ্য বিজয়ী কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ও পরাজিত প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের এলাকায় পাওয়া যায়নি।
হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. রাশিদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ওই এলাকায় নিয়মিত পুলিশ টহল দিচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।