এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমায়েত হওয়াতে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ‘এবার ফলাফল অনলাইনে প্রকাশিত হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলাফল পাওয়া যাবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো ফল পাঠানোও হবে না। কাজেই কোনো অবস্থাতেই ফলাফল প্রকাশের দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমায়েত হওয়া যাবে না।’
করোনার কারণে বাতিল হওয়া ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল শনিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রকাশ করা হবে। রাজধানী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সকাল সাড়ে ১০টায় ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এভাবে ফল প্রকাশিত হতে যাচ্ছে।
ফলাফল জানার জন্য মোবাইল ফোনের খুদে বার্তার মাধ্যমে ফল পেতে ইচ্ছুকদের ফল প্রকাশের আগেই প্রি-রেজিস্ট্রেশন করতে হবে: HSCBoard name (First 3 letter) Roll2020 টাইপ করে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফল প্রকাশের সাথে সাথেই প্রি-রেজিস্ট্রেশনকৃত পরীক্ষার্থীদের মোবাইল নম্বরে তাদের ফল পৌঁছে যাবে। এছাড়া www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইট থেকেও ফল দেখা যাবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকেও ফল জানা যাবে।
রীতি অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নেয়া হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশের আগে ফলাফলের সারসংক্ষেপ তার হাতে তুলে দেন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান। সেখানে শিক্ষামন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকেন। তবে এবার করোনার কারণে এ রীতির ব্যতয় ঘটিয়ে ভার্চ্যুয়ালি হবে এসব আনুষ্ঠানিকতা। সকাল সাড়ে ১০টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ভার্চ্যুয়ালি ফলাফল তুলে দেবেন বোর্ড চেয়ারম্যানরা। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করা হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার পরীক্ষা ছাড়া এসএসসি, জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের গড় মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
বিশেষ পদ্ধতিতে মূল্যায়নের এই ফল প্রকাশের জন্য শিক্ষাবোর্ডকে ক্ষমতা দিয়ে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনের মধ্যে দিয়েই এই ফল প্রকাশের আইনি জটিলতা কেটেছে।
২৭ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সময় চাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শনিবার সময় দেয়ায় এই দিন এ ফল প্রকাশ হচ্ছে।
গত বছরের অক্টোবরে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার না নিয়ে জেএসসি এবং এসএসসি ফলাফলের গড়ের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল দেয়া হবে। জেএসসিতে ২৫% এবং এসএসসিতে ৭৫% ধরে এ ফল তৈরি করা হবে।
২০২০ সালে ৯টি সাধারণ, কারিগর ও মাদরাসা মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ১ এপ্রিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি।