ইংলিশ কবি রবার্ট ব্রাউনের একটি বিখ্যাত কবিতা ‘দ্য প্যাট্রিয়ট’। কলেজের পাঠ্যসূচিতে বেশির ভাগ সময়ই অন্তর্ভুক্ত থাকে এই কবিতাটি। এতে একজন দেশপ্রেমিকের স্বরূপ বর্ণনা করা হয়েছে। বিশেষ করে এর ২৬ নম্বর লাইনটি ‘দাজ আই এন্টারড অ্যান্ড দাজ আই গো!’- বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করে। একজন দেশপ্রেমিক, একজন নেতার ক্ষমতায় আগমন বা আরোহণে পুষ্পবৃষ্টি ঝরতে পারে। রাস্তায়, বাড়ির ছাদে মানুষের হাততালি পেতে পারেন তিনি। বাতাসও গুণ গুণ গান গাইতে পারে। কিন্তু কিছু নেতার বিদায়বেলাটা! সেটা হয় করুণ।
অতি মর্মভেদী। তার কৃতকর্মের জন্য হাতে-পায়ে শেকল পরিয়ে সেই রাস্তা ধরে নিয়ে যাওয়া হয় যখন, তখন খাঁ খাঁ রাস্তা। কোথাও কোনো জনমানব নেই। যেন তাকে কেউ চেনেই না। তার কাছে মনে হয় পৃথিবীর সব মানুষ মরে গেছে। এই কবিতাটির ব্যাখ্যা করা যায় অনেকভাবে। অনেক উপমায়। তার মধ্যে আজ সর্বোত্তম উপমা হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের বহুল বিতর্কিত, বিশ্বনেতাদের চোখে নিন্দার পাত্র, বেশির ভাগ মানুষের ধিক্কার পাওয়া প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষ করে ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে তিনি যা করেছেন, তা সমর্থন করেননি বিশ্বের বিবেকবান, সচেতন কোনো মানুষ। তিনি ধিক্কৃত হয়েছেন নিজের পরিমণ্ডলেই। একে একে তার চারপাশ থেকে সরে গেছেন বড় বড় নেতা, অধীনস্ত কর্মকর্তা। যে ট্রাম্পের ভয়ে ‘বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খেতো’ তার নির্দেশ ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছেন তার অধীনস্তরাও। তিনি এতটাই নিগৃহীত হয়েছেন যে, বুঝতে পেরেছেন তার জন্য বিদায় অনুষ্ঠান হবে না। নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন না তিনি। কারণ, তিনি জানেন কি পরিমাণ অপদস্ত নিজেকে ভাবছেন এখন। তাই জেনারেলদের অনুরোধ করেছিলেন সম্মান রক্ষার জন্য একটি বিদায় অনুষ্ঠান আয়োজন করতে। কিন্তু তারাও সাফ না বলে দিয়েছেন। তারাও বলে দিয়েছেন, তারা জনগণের। তারা কোনো নেতার নন। ঠিক এমনটিই হয়েছিল ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়। ৯০-এর গণআন্দোলনে যখন ঢাকার বাতাসে বারুদের গন্ধ। বাড়িতে বাড়িতে দরজা জানালা বন্ধ। তখনো গণতন্ত্রের জন্য উন্মুখ নুর হোসেনদের মতো, ডাক্তার মিলনের মতো মায়ের অকুতোভয় সেনারা- গুলির ভয়ে পালিয়ে যাননি। লড়াই করেছেন। দেয়া হয়েছিল কারফিউ। সকালে, দুপুরে, সন্ধ্যায়, নিশি রাতে বিস্ফোরণের শব্দ। ভয়ে মায়ের বুকে কেঁপে উঠতো দুধ পানরত শিশু। কোনোভাবেই যখন এরশাদ সামাল দিতে পারছিলেন না, তখন তিনি সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তাদের সহায়তা চেয়েছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল পত্রিকায়। তাতে বলা হয়েছিল, সেদিন সেনাবাহিনী তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিল- সেনাবাহিনী দেশের জনগণের। কোনো একক ব্যক্তির নিরাপত্তার জন্য নয়। এরপরই এরশাদ পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ঘটনার সঙ্গে কেমন যেন মিলে যাচ্ছে ডনাল্ড ট্রাম্পের ভাগ্য। এরশাদের মতো তাকেও প্রত্যাখ্যান করেছে পেন্টাগন।
ট্রাম্প আপাদমস্তক একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই তিনি বিতর্কে। টেলিভিশন রিয়েলিটি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিসে’ নারীদের নিয়ে তার আপত্তিকর মন্তব্য তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনকালীন শুধু যুক্তরাষ্ট্রকে নয়, সারা বিশ্বকে আন্দোলিত করেছিল। তিনি নারীদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। বলেছিলেন, একবার যদি তুমি সেলিব্রেটি হয়ে যাও তাহলে যা খুশি তাই করতে পারো। এমনকি একজন নারীর গোপনাঙ্গ (অশ্লীল ভাষায় এখানে একটি শব্দ ব্যবহার করেছিলেন) গ্রাস করতে পার। এরও আগে তিনি অনেক নারীকে শয্যাসঙ্গী করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। সেগুলো বিচারে ওঠে। এসব নারীর কয়েকজন তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। তার মধ্যে আছেন একজন পর্নো তারকাও। এ নিয়ে মার্কিন মুল্লুক কেঁপে ওঠে। ওই নির্বাচনে সবাই ধরে নিয়েছিলেন বিজয়ী হবেন ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মারপ্যাঁচে হেরে যান হিলারি। তবে তিনি পপুলার বা জনপ্রিয় ভোটে ট্রাম্পের চেয়ে ৩০ লাখ বেশি ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু এই নির্বাচন নিয়ে তোলপাড় হয় যুক্তরাষ্ট্রে। বলা হয়, রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে। তারা হিলারিকে হারিয়ে দিয়ে ট্রাম্পকে জিতিয়ে দিয়েছে। এর স্বপক্ষে অনেক প্রমাণও হাজির করা হয়। দেখা যায়, নিউ ইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারে রাশিয়ার কূটনীতিক এবং ক্রেমলিনঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন ট্রাম্পের ছেলে ট্রাম্প জুনিয়র অথবা এরিক এবং জামাই জারেড কুশনার। তারা হিলারিকে পরাজিত করতে রাশিয়ার সহায়তা চেয়েছেন। আর নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ডেমোক্রেট দলের বেশ কিছু গোপন দলিল বা ইমেইল ফাঁস করে দেয়। সেই রাশিয়া কানেকশন নিয়ে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে গত চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে। অনেক বড় বড় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া কংগ্রেসে রাশিয়া কানেকশন নিয়ে সাক্ষ্য দেয়া থেকে তার কর্মকর্তাদের বিরত রেখেছেন। এ জন্য বিচারে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রথম দফায় তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনা হয়। প্রতিনিধি পরিষদে তা পাস হলেও আটকে যায় রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে। পার পেয়ে যান ট্রাম্প।
তিনি ২০১৭ সালের ২০শে জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই তিনি ৭টি মুসলিমপ্রধান দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর ফলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় মুসলিম বিশ্বসহ তাবৎ দুনিয়ায়। এ জন্য বৃটেনে ট্রাম্পকে নিষেধাজ্ঞার দাবি ওঠে। অনলাইনে এ বিষয়ে কয়েক লাখ মানুষ স্বাক্ষর করার পর বিষয়টি ওঠে বৃটিশ পার্লামেন্টে। সেখানে ট্রাম্পকে বৃটেনে নিষিদ্ধ করা নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বিতর্ক হয়। তবে সেই বিতর্কের কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ২০১৫ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোকে নিয়ে ইরানের সঙ্গে ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি করেন। অবরোধ শিথিল করার বিনিময়ে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় থামিয়ে রাখবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে দমিয়ে রাখার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ওবামা। কিন্তু, ক্ষমতায় আসার পর পর ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। তিনি ২০১৮ সালে তার সেই কথা অনুযায়ী চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন। নতুন করে অবরোধ আরোপ করেন ইরানের ওপর। ফলে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আবার মুখোমুখি অবস্থানে চলে যায়। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হতে হতে আবার থেমে যায়। সেই ঝুঁকি শেষ সময় পর্যন্তও ছিল। অনেকে আশঙ্কা করছিলেন, ক্ষমতার মেয়াদের শেষ সময়ে তিনি ইরানে সামরিক হামলা চালাতে পারেন।
বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে লড়াই করছে, কার্বন নির্গমন সীমিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। এ জন্য অনেক সংস্থা, সরকার তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি কোনোকিছুতে কান দেননি। ফলে জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তিধর ডনাল্ড ট্রাম্পকে চোখ রাঙানি দিয়েছে সুইজারল্যান্ডের মাত্র ১৫ বছরের বালিকা, পরিবেশকর্মী গ্রেটা থানবার্গ। ওই সম্মেলনে ট্রাম্পের মতো নেতাদের উদ্দেশ্য করে থানবার্গ তার বক্তব্যে চোখ রাঙিয়ে, কটমটে চোখে তাকিয়ে দৃপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেছে- ‘হাউ ডিয়ার ইউ!’ অর্থাৎ আপনাদের সাহস কত বড়!
এখানেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস মহামারিতে এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছেন। করোনাভাইরাস মোকাবিলার চেয়ে তিনি চীনকে ঘায়েল করতে বেশি সচেষ্ট ছিলেন। তার দেশে যখন অকাতরে মানুষ মারা যাচ্ছে, নিউ ইয়র্ক এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়, তখন তিনি করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করেন ‘চায়না ভাইরাস’ হিসেবে। চীনের সঙ্গে তার বিরোধ শুধু এই এক ভাইরাস নিয়ে নয়। চীনের সঙ্গে তিনি পুরোপুরি বাণিজ্যযুদ্ধ বাধিয়ে দেন। অভিযোগ করেন, চীনের প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে গুপ্তচরবৃত্তি করছে চীন।
বিশ্বের বহু মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর স্বপক্ষে মিডিয়ায় অনেক প্রমাণ দেখানো হয়। এ ছাড়া ক্রাউন প্রিন্স সৌদি আরবে ভয়াবহভাবে ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি ট্রাম্প। ওদিকে তিনি ফিলিস্তিনিদের অধিকার লঙ্ঘন করে একটি বহুল বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেন। তিনি জেরুজালেমকে একতরফাভাবে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তেল আবিবে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসকে সরিয়ে নিয়ে যান জেরুজালেমে। এর মধ্য দিয়ে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সম্পর্ক তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
সর্বশেষ এবারের নির্বাচনে পরাজিত হয়েও তিনি পরাজয় মানেননি। এমনকি ক্ষমতার শেষদিন পর্যন্ত স্বীকার করেননি তিনি হেরেছেন। পক্ষান্তরে জনরায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান করে তিনি একগুঁয়েভাবে বলে গেছেন, নির্বাচনে জালিয়াতি, ভোট কারচুপি হয়েছে। এর পক্ষে তিনি বা তার সমর্থকরা কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। সারা বিশ্ব যখন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছে, তখন তিনি একরোখাভাবে বলে গেছেন ‘তালগাছটা’ আমার। তার সর্বশেষ চূড়ান্ত রূপ দিয়েছেন ৬ই জানুয়ারি। এদিন তার উস্কানিতে যা ঘটেছে ক্যাপিটল হিলে, তা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন। ক্যাপিটল হিলে হামলাকারীদেরকে তার মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প আখ্যায়িত করেছেন ‘দেশপ্রেমিক’ হিসেবে। ট্রাম্পের এহেন কর্মকাণ্ডের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এ যাবৎকালের ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয়বার অভিশংসনের মুখে। প্রতিনিধি পরিষদ তাকে অভিশংসিত করেছে। এখন প্রস্তাব যাবে সিনেটে। তারপর চলবে এর ধারাবাহিকতা। যদি এতে তিনি অভিযুক্ত প্রমাণিত হন, তাহলে জীবনে আর কোনোদিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারবেন না ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এমনিতরো একতরফা এবং একগুঁয়েমি কাজ করেছেন একের পর এক। মানুষ কি ভাবছে, বিশ্ব কি ভাবছে, তার ব্যক্তিগত ইমেজ কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে- সেদিকে থোড়াই কেয়ার করেছেন। নিজেকে মনে করেছেন বিশ্বের একনম্বর ক্ষমতাধর। এতে কোনো সন্দেহ নেই তিনি একনম্বর। কিন্তু ক্ষমতাধর হলেই যা খুশি তাই করা যায় না। আশেপাশে যারা থাকেন, তারাই শুধু বাহবা দেন। হাততালি দেন। কিন্তু আখেরে তার অবস্থা হয় ‘দ্য প্যাট্রিয়ট’-এর মতো। তার পরিণতি হয় ভয়াবহ। তখন কেউ পাশে থাকে না। এক নম্বর ক্ষমতাধর হয়েও জনসমক্ষে বের হন না। তখন তিনি আওড়ান ‘দ্য প্যাটিয়ট’-এর স্তবক-
‘হায় রে! এই আমি সূর্য্যকে ছুঁতে চেয়েছিলাম
প্রিয়তম বন্ধুর কাছে তা গচ্ছিত রাখতে চেয়েছিলাম!
এমন কিছু ফেলে আসিনি যা অন্য কেউ করতে পারে:
তোমরা দেখছো আমার ফসল, যা আমি ফলিয়েছি
ঠিক এই দিনে, একটি বছর হতে চলেছে।
বাড়িগুলোর ছাদে এখন আর কেউ নেই
জানালার পাশে শুধু বসে আছেন জড়াগ্রস্তরা
সবচেয়ে উত্তম দৃশ্য হলো, যা অনুমোদিত
কসাইখানার গেট অথবা আরো ভালো কোনো স্থান
প্রাণদণ্ডের উঁচু মঞ্চটি, আমি মনে করি।
আমি পবিত্র হলাম, প্রয়োজনের চেয়েও বেশি
পিছনে দড়িতে বাঁধা কব্জি দু’টি যেন কেটে যাচ্ছে
মনে হয়, আমি অনুভব করলাম, কপাল থেকে রক্ত ঝরছে
বিদ্বেষ পোষণকারী কেউ ছুঁড়ে মারছে
পাথর আমার দিকে আমার বিগত অপকর্মের জন্য।
এভাবেই আমার আগমন এবং এভাবেই আমার প্রস্থান…।’