ঘাটাইল (টাঙ্গাইল): বঙ্গবন্ধুর খুনি সেনাবাহিনীর বরখাস্ত রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান ওরফে মোসলেম উদ্দিন খানসহ ৫২ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করেছে সরকার। তাদের মধ্যে ঘাটাইলের যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল বাছেদ করিম রয়েছেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭০তম সভার সুপারিশের আলোকে তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করে গত ৫ জানুয়ারি গেজেট হয়েছে, যা আজ রোববার প্রকাশ করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মোসলেহ উদ্দিনসহ পাঁচজন পালিয়ে আছেন, যাদের মধ্যে চারজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বীরত্বের খেতাব পেয়েছিলেন। হাই কোর্ট এক আদেশে তাদের সেই খেতাব স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। গত ১৯শে নভেম্বর জামুকার সভায় মোসলেহ উদ্দিনসহ ৫২ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়। সেই সুপারিশের প্রেক্ষিতে তাদের সনদ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করা হল।
মোসলেহ উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুরের দত্তেরগাঁও গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল হক খান। মোসলেহ উদ্দিনের সেনা গেজেট নম্বর-৬৪৩। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) মহাপরিচালক মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল রোববার বলেন, “মোসলেহ উদ্দিনের গেজেট বাতিল হয়েছে কারণ উনি বঙ্গবন্ধুর খুনি। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খারিজ করা হয়েছে।” বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিল করতে আদালতের নির্দেশনার কথা জানিয়ে জামুকা মহাপরিচালক বলেন, “তার (মোসলেহ উদ্দিন) খেতাব এবং মুক্তিযোদ্ধার সনদ দুটোই বাতিল করা হয়েছে।” সনদ বাতিল হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- নরসিংদী সদরের আবুল ফজল (গেজেট-৩৭৫২, সনদ-ম-১৮৫১৫), মো. জয়নাল (গেজেট-৩৭৫৯, সনদ-ম-১৮৫১৪), কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের মৃত গোলাম মোস্তফা (গেজেট-১৮৩২), গাজীপুরের কালীগঞ্জের আবদুল কাদের (সেনা গেজেট-১৭৭১৭, সনদ-৭৪৮৫৫), মো. আলতাফ হোসেন (গেজেট-১৫২৮), কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের মো. ওয়াহিদুর রহমান (গেজেট-৫৯৫৬) ও মরহুম মো. আবদুল মালেক (গেজেট-৬৮৯৬)। কক্সবাজার উখিয়ার রুহুল আমিন (গেজেট-২৪৪), ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ডা. এ গাফফার মিয়া (লাল মুক্তিবার্তা নং-১০৮০৬০০৫৪), বগুড়ার সারিয়াকান্দির মো. সামাদ আলী (গেজেট-২৯৮২, সনদ-১৯৯৯৮৫), নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চাঁদ মোহাম্মদ (গেজেট-৬৭২), মো. ওসমান আলী (গেজেট-৭২৭), মো. জাকির হোসেন (গেজেট-৭২৮), আ. কাদের মোল্লা (গেজেট-৬৮২), আ. রহমান (গেজেট-৭০১), আ. জব্বার (গেজেট-৭০৩), সরদার মো. বয়েত রেজা (গেজেট-৭১৩, সনদ-৭২৬৪৪), মো. শামসুল হক (গেজেট-৬৪১), মৃত সিরাজুল ইসলাম (গেজেট-৬৮৩), মো. আ. গফুর খান (গেজেট-৬৮৪), মো. শফি উদ্দিন (গেজেট-৭১২), মো. নাজিম উদ্দিন (গেজেট-৬৭৫), মো. আ. রব (গেজেট-৫৬৪), মো. জামাত আলী (গেজেট-৬৫৯), মো. আ. সামাদ (গেজেট-৬৮৫), মো. আফজাল হোসেন (গেজেট-৬৮৮), মো. আ. আউয়াল (গেজেট-৫৪৮), মো. রফিকুল ইসলাম (গেজেট-৬৮৬), মৃত আনছার আলী (গেজেট-৬৯৩), মৃত নুরুল ইসলাম (গেজেট-৬৯৬), পাবনার ঈশ্বরদীর মো. তরিকুল ইসলাম (গেজেট-১০৪৬), পাবনা সদরের মো. নাসির উদ্দিনের (গেজেট-৩২৫) মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল হয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের মো. আব্দুল বাছেদ করিম (গেজেট-৬০৬), সখিপুরের মো. আ. বছির মিয়া (গেজেট-৪১৩৬), নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মৃত ইলিয়াস মিয়া (গেজেট-১৫৩৯), তোফাজ্জল হোসেন (গেজেট-৮৯২), নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মো. শহীদুল্লাহ সরদার (গেজেট-২৭৯), মৃত আলী আকবর (গেজেট-৪৭৫), মনিরুল ইসলাম (গেজেট-৪৭৩), রহমত উল্লাহ (লাল মুক্তিবার্তা নং-০১৪০২০১৬৯), আবদুল মাজেদ (গেজেট-৩৫৫), বরিশালের উজিরপুরের মো. বেলায়েত আলী বিশ্বাস (গেজেট-৪৬৯০), মো. আবদুল হাকিম মোল্লা (গেজেট-৫০৩১), এছাহাক মুন্সি (গেজেট-৫০২৩), আবদুল মাজেদ আলী হাওলাদার (গেজেট-৪৯৭৪), মৃত মো. আ. রহিম (গেজেট-৫৩৫২), হারুন অর রশিদ (গেজেট-৫১৬১) এবং আ. রহমান সরদার (গেজেট-৫৪১০), কিশোরগঞ্জের মৃত মো. মুখলেছুর রহমান (গেজেট-১৪২৪), মো. নাসিরুল ইসলাম খান (গেজেট-৩৫৭৯) ও মো. আজিজুল হকের (গেজেট ৩৩০৩) মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।