কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়ার ৮ মাস পরেও শরীরে ইমিউনিটি থাকতে পারে বলে প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। ফলে আশা জেগেছে যে হয়ত এই ইমিউনিটি বছরের পর বছর ধরে শরীরে স্থায়ী হতে পারে। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতার মেয়াদ নিয়ে যে শঙ্কা দেখা গিয়েছিল তাও দূর হলো। ক্যালিফোর্নিয়ার লা জোলা ইনস্টিটিউটের গবেষক শেইন ক্রোটি এই গবেষণা দলের সদস্য। তিনি বলেন, প্রথম থেকেই আমাদের আশঙ্কা ছিল যে এই ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে শরীরের স্মৃতি খুব ভাল নয়। তবে এখন দেখা যাচ্ছে ইমিউনি স্মৃতি অত্যন্ত ভাল।
গত ৬ই জানুয়ারি এই গবেষণাটির ফল প্রকাশিত হয়। এর আগের গবেষণাগুলো যেখানে দাবি করেছিল, কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুতই আবারো আক্রান্ত হতে পারেন সেখানে এই গবেষণায় উল্টো দাবি করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, খুবই ছোট একটি অংশের মানুষই দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই একটি জনগোষ্ঠির মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি গঠন করা সম্ভব তাও এই গবেষণায় প্রমাণিত হলো।
গবেষণায় কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া ১৮৫ নারী-পুরুষের রক্তের নমুনা নেয়া হয়। তাদের বেশিরভাগই মাঝারি মাত্রার সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। তাদের মাত্র ৭ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ৮ মাস ব্যবধানে তাদের রক্তে থাকা এন্টিবডির পরিমাণ হিসেব করা হয়। এতে দেখা যায়, ৮ মাস পরেও তাদের দেহে এন্টিবডি সামান্য হ্রাস পেয়েছে। যদিও একেকজনের দেহে একেকরকম হারে এন্টিবডি হ্রাস পেয়েছে। তবে টি-সেলের সংখ্যা একেবারেই কমেনি বলে গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়েছে। বি-সেলের সংখ্যাও স্থিতিশীল ছিল। কখনো কখনো এর পরিমাণ বাড়তেও দেখা গেছে। অর্থাৎ, মানবদেহ নতুন করে এন্টিবডি গঠন করছে।
করোনাভাইরাসের আরেকটি ধরণ সার্সকে কোভিড-১৯ এর একদম কাছাকাছি বলে ধরে নেয়া হয়। গবেষণা বলছে, মানবদেহে সার্সের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে ১৭ বছর। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের দেহেও যুগের পর যুগ ধরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থায়ী হবে।