মার্কিন ক্যাপিটল হিলে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হামলার পর হামলাকারী পিতার উগ্র-সমর্থকদের ‘দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাস্প কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প। এ নিয়ে প্রচারিত তার টুইটকে ঘিরে মার্কিন রাজনীতিতে অন্তহীন বিতর্ক চলছে। যদিও সমালোচনার মুখে তিনি এরইমধ্যে বার্তাটি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছেন। বুধবার মার্কিন ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক ওই হামলার পর হামলাকারী ডনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র-সমর্থকদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তাদের ‘দেশপ্রেমিক’ সম্মোধন করে বার্তা প্রচার করেন ইভাঙ্কা। তার বিতর্কিত ওই টুইটটি ছিল এমন- ‘হে আমেরিকার দেশপ্রেমিকরা, দয়া করে আপনারা শান্ত হোন। হিংসা বন্ধ করা দরকার। নিরাপত্তা ভঙ্গ করা অথবা দেশের আইনের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন অগ্রহণযোগ্য।’ হামলা চলাকালে প্রচারিত ইভাঙ্কার বার্তাটি অগ্নিগর্ভ ক্যাপিটাল হিল তথা ওয়াশিংটন ডিসির আগুনে রীতিমতো ঘি ঢালার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ নিয়ে মার্কিন রাজনীতিতে বাড়তি উত্তাপ তৈরি হয়।
পাল্টা টুইটে নিন্দার ঝড় ওঠে। ফলশ্রুতিতে তিনি টুইটটি মুছে ফেলেন। অবশ্য তার আগেই এর স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইভাঙ্কার টুইটের স্ক্রিনশট পোস্ট করে তার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছোড়েন প্রতিষ্ঠিত সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের এক সাংবাদিক। বলেন, ব্যাখ্যা দিন, কেন আপনি ঘৃণ্য হামলাকারীদের দেশপ্রেমিক বলছেন? ইভাঙ্কা অবশ্য জবাব দিয়েছেন নরম সুরে। পরবর্তী টুইটে তিনি লিখেন- শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদই দেশপ্রেমের পরিচয়। হিংসা মেনে নেয়া যায় না। এর তীব্র নিন্দা করা উচিত। জো বাইডেনকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে ডাকা মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন চলাকালে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায় ট্রাম্পের উগ্র-সমর্থকরা। অস্ত্র-গুলিসহ ক’ঘন্টার তাণ্ডবে পার্লামেন্ট ভবন তখন প্রায় তাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে যায়। অবশ্য শেষ পর্যন্ত তারা টিকতে পারেনি, পালাতে বাধ্য হয়েছে। অভূতপূর্ণ-নজিরবিহীন এ হামলার ঘটনায় হতবাক গোটা দুনিয়া। আমেরিকার ইতিহাসে অভ্যন্তরীন রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এমন ঘৃণিত ঘটনা এবারই প্রথম। ওই হামলায় এ পর্যন্ত ৪ জন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। আটক হয়েছেন ৫২ হামলাকারী এবং উস্কানিদাতা। হামলা ঠেকানোর পর বৃহস্পতিবারই মার্কিন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। যৌথ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস তাদের জয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। পরাজিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। আগামী ২০ জানুয়ারি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন।