প্রার্থনা ও নানা আয়োজনে সারা দেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব-বড়দিন পালিত হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি গির্জায় শুরু হয় বড়দিনের উৎসব। দিনটি উপলক্ষে খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারীরা মেতেছেন আনন্দ-উৎসবে। একইসঙ্গে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে প্রার্থনা করা হয় প্রতিটি গির্জায়। সকাল থেকেই রাজধানীর গির্জাগুলোতে করোনা মহামারি থেকে মুক্তির প্রার্থনা করা হয়। নানা আচার-আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যীশুখ্রিস্টকে স্মরণ করছেন এই ধর্মাবলম্বীরা। রাজধানীর তেজগাঁও জপমালা রাণীর গির্জায় প্রার্থনা জানাতে সকাল থেকেই আসেন ভক্তরা। তবে করোনার কারণে প্রার্থনা ও আচার পালনে করমর্দন করা থেকে বিরত ছিলেন তারা।
এবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে নিরাপদ দূরত্ব রেখে বসা ও গির্জায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। খ্রিস্ট ধর্মমতে, ২০২০ বছর আগে বেথেলহেম নগরে জন্মেছিলেন খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যীশুখ্রিস্ট। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, স্রষ্টার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য যীশুখ্রিস্ট জন্ম নিয়েছিলেন।
বড়দিন উপলক্ষে দিনের শুরু থেকেই শুরু হয় প্রার্থনা সঙ্গীত ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশের সব গির্জাগুলোকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। রাজধানীর পাঁচতারা হোটেলগুলোতেও সান্তা ক্লজ, ক্রিসমাস ট্রি ও আলোকসজ্জায় বড়দিনের বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিস্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। দেশের অনেক অঞ্চলে কীর্তনের পাশাপাশি বসবে ধর্মীয় গানের আসর। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনেকে বড়দিনকে বেছে নেয়। তবে এবার করোনার কারণে দিনটি পালন করতে হবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। সকালে দেশের প্রতিটি গির্জায় অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ খ্রিস্টযাগ। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চট্টগ্রামের চার্চগুলোতে পালিত হচ্ছে বড়দিনের উৎসব। নগরীর পাথরঘাটা যব মালা রানী ক্যাথলিক চার্চে খ্রিস্টযাগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা। এদিকে খুলনাতে করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে উদ্যাপিত হচ্ছে। রাতের পর সকালে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে গির্জাগুলোতে। সকল বয়সের নারী ও পুরুষ শিশুরা এতে অংশ নেয়। অন্যদিকে রাজশাহীর ২১টি ধর্মপল্লীর গির্জায় গির্জায় শুরু হয় বিশেষ প্রার্থনা। সকালে বাগানপাড়া ও ডিঙ্গাডোবা চার্চসহ মহানগরীর অন্যান্য উপাসনালয়ে যীশুখ্রিষ্টকে স্মরণ করে প্রার্থনা করা হয়। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবার বড়দিনের আয়োজনে চাকচিক্য ছিল কম। এ ছাড়া রংপুর, বান্দরবান, শেরপুর, রাজবাড়ী, নাটোর, কুড়িগ্রামসহ সারা দেশে নানাভাবে বড়দিন উদ্যাপিত হচ্ছে।