ঝালকাঠি: আরজু আক্তার (১৮), মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেম হয় নাঈম সরদারের (২২) সাথে। দীর্ঘ দিন চলতে থাকে তাদের এ সম্পর্ক। একপর্যায়ে আরজু ঝালকাঠির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করেন, তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক তার অভিযোগটি ঝালকাঠি থানায় এফআইআর হিসেবে রেকর্ডের নির্দেশ দিলে নাঈমের বাবা আনোয়ার হোসেন ছেলেকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন। এ মামলায় ভুক্তভোগী আরজুর সাথে নাঈমের বিয়ের শর্তে আদালত তাকে জামিন মঞ্জুর করেন। পরে রোববার আদালত চত্বরেই তাদের বিয়ে হয়।
ঝালকাঠির অবকাশকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো: শহিদুল্লাহর নির্দেশে রোববার দুপুরে দু’পক্ষের উপস্থিতে বিয়ে পড়ান কাজী মাওলানা মো: সৈয়দ বশির।
এ বিয়েতে বর হলেন বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগাতি গ্রামের আনোয়ার সরদারের ছেলে নাঈম সরদার। আর কনে হলেন ঝালকাঠির বালিঘোনা গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেনের মেয়ে আরজু আক্তার (১৮)। বিয়ের পর নাঈমের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক মো: শহিদুল্লাহ। এ সময় নব-দম্পতিকে মিষ্টি মুখ করান আদালতের কর্মচারীরা।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি আবদুল মান্নান রসুল বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রোববার অবকাশকালীন জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন শুনানির সময় আসামি পক্ষ নির্যাতিতা মেয়েটিকে বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে নির্যাতিতার পক্ষও এ প্রস্তাবে রাজি হলে বিচারক মো: শহিদুল্লাহ আদালত চত্বরেই পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ের নির্দেশ দেন।
আদালত চত্বরে আসামি, ভিকটিম ও উভয়পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আদালতে কাগজপত্র জমা দিলে শুনানি শেষে বিশ হাজার টাকা বণ্ডে আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। বর নাঈম পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান। কনে আরজু দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখা-পড়া করেছেন। ২০১৯ সালের প্রথম দিকে তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় ও প্রেম হয়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় আরজুদের বাড়ির পেছনের বাগানে মোবাইলে ডেকে নিয়ে আরজুকে ধর্ষণ করেন নাঈম।
বিয়েতে খুশি হয়ে নাঈম সরদার বলেন, ‘আমাদের প্রেমের সম্পর্ক এখন বিয়েতে পরিণত হয়েছে, এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। আমি এতে খুশি। আমি আরজুকে নিয়ে সংসার করতে চাই। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
বিয়ের কাজী মাওলানা মো: সৈয়দ বশির বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে পিপি সাহেব আমাকে বিয়ে পড়াতে ডাকেন। আমি এসে বিস্তারিত শুনে উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে রেজিস্ট্রি করেছি।’
বাদিপক্ষের আইনজীবী ফয়সাল খান বলেন, মামলা চলাকালে উভয়পক্ষ বিয়ের বিষয়ে সম্মতি দেয়। পরে বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়। বিচারক দু’পক্ষের কথা শুনে রোববার বিয়ের দিন ধার্য করেন। এ দিন বিয়ে শেষে আসামিকে জামিন দেয়া হয়।