মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক (সুমন), উত্তরা প্রতিনিধি: ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। জাতীয় জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে এই দিনে আমরা মুক্তি ও বিজয় লাভ করি। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশের গৌরব অর্জন করি আমরা। বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন, পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির দিন। এই গৌরবময় দিনকে উপলক্ষ করে উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরি আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার জন্য যে অকুতোভয় বীর সন্তানেরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, গভীর বেদনা ও শ্রদ্ধায় তাদেরকে স্মরণ করা হয়।
আজ সকাল ১০টায় উত্তরা মডেল টাউনের ১০নং সেক্টরের ০১ নং রোড ০৪ নং বাড়িতে অবস্থিত উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরির হল রুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অকুতবয়বীর অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল্লাহ আল- মাহামুদ, বীর প্রতীক। সাবেক অধ্যক্ষ নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব, উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরির প্রধান উপদেষ্টা মাহমুদ সাজ্জাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মোহাম্মদ তারেকউজ্জামান খান।
প্রধান অতিথি ৩০ লাখ শহীদের রক্তঋণের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেছেন, “যুবশক্তি, তরুণ সমাজ এবং নতুন প্রজন্মের কাছে অনুরোধ, তোমরা তোমাদের পূর্বসূরিদের আত্মোৎসর্গের কথা কখনোই ভুলে যেও না। তাদের উপহার দেওয়া লাল-সবুজ পতাকার অসম্মান হতে দিও না।”সেই সঙ্গে মহামারীর এই কালে সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যবিধির কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। “ঘর থেকে বের হওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক পরিধান করবেন এবং মাঝেমধ্যে হাত সাবান অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করবেন। আপনার সুরক্ষা, সকলের জন্য রক্ষাকবচ।”
সভাপতি তার সমাপনী বক্তৃতায় বলেন, আজ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তোপধ্বনিতে শুরু হয় বিজয়ের উৎসব, সেই সঙ্গে গর্বময় এক বিষাদের সঙ্গে লাল-সবুজের এই পতাকার জন্য প্রাণ দেওয়া লাখো শহীদকে স্মরণের সূচনা হয়। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস; বিশ্বের হাতেগোনা যে ক’টি দেশের স্বাধীনতা দিবসের পাশাপাশি বিজয় দিবসের মতো উৎসবের উপলক্ষ রয়েছে, তার একটি বাংলাদেশ।
উত্তরা পাবলিক লাইব্রেরির রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের নাম নি¤œরূপ: ক্যাটাগরি-চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ‘ক’ গ্রুপ জাতীয় পতাকা অংকনে ১ম স্থান অর্জন করে চাইল্ড কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী আহনাফ আরিজ রাকিন। ২য় স্থান অর্জন করে লাইফ প্রিপ্যারেটরী স্কুলের কে,জি শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাশিদুল মানসিব। ৩য় স্থান অর্জন করে ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী আসফিয়া–উল-আলম।‘খ’গ্রুপ স্মৃতিসৌধ অংকনে ১ম স্থান অর্জন করে প্যারাডাইস স্কুল এন্ড কলেজের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মনীমউজ্জামান খান। ২য় স্থান অর্জন করে পেনটোন হাইস্কুলের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার।৩য় স্থান অর্জন করে তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসার তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাজিদ রহমান ফাইয়াজ। ক্যাটাগরি-রচনা প্রতিযোগিতা ‘ক’ গ্রুপ আমাদের বিজয় আমাদের আনন্দ রচনায় ১ম স্থান অর্জন করে মাইলস্টোন স্কুলের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিশাত আরা নবনি। ২য় স্থান অর্জন করে পেনটোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার। ৩য় স্থান অর্জন করে উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাজেদুর রহমান ফিয়াদ। ‘খ’ গ্রুপ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, রচনায় ১ম স্থান অর্জন করে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোনেম শাহরিয়ার নাফিম। ২য় স্থান অর্জন করে বিসিআই কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাফিয়া খান আক্তার। ৩য় স্থান অর্জন করে বিসিআই কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার।‘গ’ গ্রুপ বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য রচনায় ১ম স্থান অর্জন করেন মো.মাহফুজার রহমান। ২য় স্থান অর্জন করেন বাদল মেহেদী। ৩য় স্থান অর্জন করেন সবুর খান।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উত্তরা এলাকার স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।