আজ গাজীপুর মুক্ত দিবস

Slider জাতীয়


গাজীপুর: আজ গাজীপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানা এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর সম্মুখযুদ্ধ হয়। এতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিভিন্ন ধরনের ভারী অস্ত্র ও যানবাহন ধ্বংস এবং বহু সেনা নিহত হয়। মুক্ত হয় গাজীপুর।

অবস্থানগত কারণে পাকিস্তানি বাহিনীর একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল গাজীপুরে। নভেম্বরের শেষের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা চতুর্মুখী গেরিলা অভিযান জয়দেবপুর সেনানিবাস, সমরাস্ত্র কারখানা, রাজেন্দ্রপুর অর্ডন্যান্স ডিপোসহ পাকিস্তানি বাহিনীর বিভিন্ন অবস্থানে পরিকল্পিত আক্রমণ শুরু করে। এতে ভীতসন্ত্রস্ত ও বিপর্যস্ত পাকিস্তানি বাহিনী তাদের অবস্থান গুটিয়ে নিয়ে সেনাঘাঁটিতে একরকম অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

মুক্তিযোদ্ধারা ১৩-১৪ ডিসেম্বর গাজীপুরে সেনানিবাসে সম্মিলিতভাবে আক্রমণ চালায়। টিকতে না পেরে পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকা ফিরে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করে। তারা জয়দেবপুর সেনানিবাস, সমরাস্ত্র কারখানা এবং অর্ডন্যান্স ডিপো থেকে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহন নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে চান্দনা চৌরাস্তায় জড়ো হতে থাকে।

অন্যদিকে ময়মনসিংহ-জামালপুর-টাঙ্গাইল থেকেও মিত্র ও মুক্তিবাহিনী এবং কাদেরিয়া বাহিনীর আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে থাকে। ১৫ ডিসেম্বর চান্দনা চৌরাস্তায় জড়ো হওয়া পাকিস্তানি বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঢাকার পথে রওনা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা ছয়দানা ও টঙ্গীতে অবস্থান নেয়।

পাকিস্তানি বাহিনীর বহর মহানগরীর ছয়দানা এলাকায় পৌঁছলে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ। অন্যদিকে কাশিমপুরে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বড় একটি দল ও মিত্রবাহিনী কামান ও মর্টারের গোলা বর্ষণ করতে থাকে। গভীর রাত পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলে। কিন্তু মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর গোলাবর্ষণে পাকিস্তানি বাহিনী একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বহু সেনা নিহত হয়। বিধ্বস্ত হয় ট্যাংক, কামান, মর্টারসহ তাদের অস্ত্রশস্ত্র ও যানবাহন। শত্রুমুক্ত হয় গাজীপুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *