সবকিছু ঠিক থাকলে আজ স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে পদ্মা জয়ের। শেষ স্প্যানটি বসানো গেলে আজই সেতুতে যুক্ত হবে খরস্রোতা পদ্মার দুই পাড়। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হবে পুরো পদ্মা সেতুর অবকাঠামো। প্রমত্তা
পদ্মায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু গড়বে নতুন এক দিগন্ত। গতকাল ভাসমান বড় ক্রেনে স্প্যানটি উঠিয়ে ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির কাছাকাছি স্থানে নিয়ে রাখা হয়। আজ সুবিধাজনক সময়ে স্প্যানটি স্থাপন করা হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, আজ ৪১ নম্বর স্প্যানটি বসাতে প্রস্তুত প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সর্বশেষ স্প্যানটি স্থাপনের মাধ্যমে পদ্মার দুই পাড় মাওয়া ও জাজিরা যুক্ত হয়ে যাবে। ঘন কুয়াশার কারণে সর্বশেষ স্প্যান খুঁটিতে বসানোর কাজটা কিছুটা কঠিন হতে পারে। এ জন্য আগেই খুঁটির কাছে নিয়ে রাখা হয়েছে। মাওয়ার কুমারভোগের নির্মাণমাঠে যেখানে স্প্যান প্রস্তুত করা হয়, সেখান থেকে এটি বসানোর খুঁটি খুব বেশি দূরে নয়। এ জন্য কুয়াশা থাকলেও বড় কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।
এদিকে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে শেষ স্প্যান বসানোর ঐতিহাসিক মুহূর্তটি উদ্?যাপন করা হচ্ছে না। আগে থেকেই সব কর্মসূটি বাতিল করেছে সেতু বিভাগ। ফলে আজ অনেকটাই অনাড়ম্বরভাবেই স্প্যান তোলার কাজ সম্পন্ন হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি সংক্রান্ত পর্যালোচনা নিয়ে আগামী শুক্রবার সেতু ভবনে সভা করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেখানেই তিনি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবেন। এর আগে স্প্যান তোলার মুহূর্তটি সেতু ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করার কথা ছিল সেতুমন্ত্রীর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শেষ মুহূর্তে সেটিও বাতিল করা হয়েছে বলে সেতু বিভাগ সূত্র জানায়।
সেতু বিভাগের সচিব মো. বেলায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার সেতুর শেষ স্প্যান বসানোর সব প্রস্তুতি নেয়া আছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ স্প্যানটি বসতে পারে। তবে এটি পুরোপুরি কারিগরি বিষয় এবং তা দেখভাল করছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও প্রকৌশলীরা।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। সে হিসেবে ৩ বছর ২ মাস ১০ দিনে বসানো হচ্ছে সেতুর সব ক’টি স্প্যান। বন্যা, নদীভাঙন, চ্যানেলে নাব্য সংকট, করোনাভাইরাস মহামারিসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে একে একে ৪০টি স্প্যান বসানো হয়। গত ৪ঠা ডিসেম্বর ৪০তম স্প্যান বসানো শেষ হওয়ায় এখন শেষ স্প্যানটি বসলেই মিলিয়ে যাবে নদীর এপার-ওপার। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ৩রা ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯১ ভাগ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮৮ দশমিক ৩৮ ভাগ।